জানার আছে অনেক কিছু (তাপগতিবিদ্যা)!!!


তাপগতিবিদ্যা সম্পর্কিত অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের সহজ সমাধান দেখুন এখানেই।

১। ব্যবস্থা কাকে বলে? ব্যবস্থা কত প্রকার ও কী কী?

উত্তরঃ জড় জগতের সম্পূর্ণ অংশকে একসাথে পর্যবেক্ষণ করে ঐ জগতের সমস্ত আচরণ ব্যাখ্যা করা জটিল ব্যাপার। তাই গড় জগতের অংশবিশেষকে পর্যবেক্ষণের জন্য বিবেচনা করা হয়। জড় জগতের যে অংশবিশেষকে পর্যবেক্ষণের জন্য বিবেচনা করা হয় তাকে সিস্টেম বলে।

সিস্টেম দুই প্রকার। যথা- (ক) উন্মুক্ত সিস্টেম (খ) বদ্ধ সিস্টেম

উন্মুক্ত সিস্টেমঃ যে সিস্টেম পরিবেশের সাথে ভর ও শক্তি আদান-প্রদান করে, তাকে উন্মুক্ত সিস্টেম বলে।

বদ্ধ সিস্টেমঃ যে সিস্টেম পরিবেশের সাথে শুধু শক্তির আদান-প্রদান করে তাকে বদ্ধ সিস্টেম বলে।

২। তাপগতীয় অপেক্ষক কাকে বলে? উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ কোনো গ্যাসীয় ব্যবস্থাকে সাধারণভাবে তাপগতীয় ব্যবস্থা বলে। এরুপ ব্যবস্থায় T, P  এবং V পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত হয়। তাই T, P  এবং V কে তাপগতিয় চলক বলে।  

তাপগতীয় ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট যে ভৌত রাশিসমূহ কোন না কোনো ভাবে চলকT, P  এবং V এর উপর নির্ভর করে তাকে তাপগতীয় অপেক্ষক বলে। কোনো তাপগতীয় ব্যবস্থায়র অভ্যন্তরীণ শক্তি U ব্যবস্থার আয়তন V ও উঞ্চতা T এর উপর নির্ভর করে। তাই U কে T ও V এর অপেক্ষক বলা যায়।

৩। সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ শক্তি বলতে কী বুঝ? [জাবি-২০১৬]

কোনো ব্যবস্থার সঞ্চিত শক্তি যা পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী অন্যান্য শক্তিতে রুপান্তরিত হতে পারে তাকে অভ্যন্তরীণ শক্তি বলে। কোনো ব্যবস্থা তাঁর পরিবেশের সাপেক্ষে যে অবস্থায় থাকুক না কেন এর কিছু না কিছু অভ্যন্তরীণ শক্তি থাকে।

(1) ব্যবস্থার রৈখিক গতি, স্পন্দন গতি বা ঘুর্ণন গতির ফলে অভ্যন্তরীণ শক্তির উদ্ভব ঘটে

(2) কোনো ব্যবস্থার অভ্যন্তরীণ শক্তিকে U দিয়ে প্রকাশ করা হয়

(3) বাহ্যিক কোনো কারণে ব্যবস্থার ভৌত অবস্থার কোনো প্রকার পরিবর্তন ঘটলে অভ্যন্তরীণ শক্তির পরিবর্তন ঘটে

(4) যেমন-ব্যবস্থার তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে অভ্যন্তরীণ শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাপমাত্রা হ্রাস করলে এর বিপরীত ঘটনা ঘটে।

৪। তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র বিবৃত কর।

উত্তরঃ বিজ্ঞানী জুল তাপ ও যান্ত্রিক শক্তির মধ্যে একটি সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেন যা তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র বলা হয়।

সূত্রটি হল-কোনো কাজ যখন সম্পূর্ণরুপে তাপে অথবা তাপ সম্পূর্ণরুপে কাজে পরিণত হয় তখন কাজ ও তাপ পরস্পর সমানুপাতিক হয়।

৫। তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্রের তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ

তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্রের তাৎপর্যঃ

তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্রের নিম্নলিখিত তাৎপর্য রয়েছেঃ

(১) এটি তাপ ও কাজের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে;

(২) এই সূত্র অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ কাজ পেতে হলে নির্দিষ্ট পরিমাণ তাপের প্রয়োজন অথবা নির্দিষ্ট পরিমাণ  তাপ পেতে হলে নির্দিষ্ট পরিমাণ কাজ সম্পাদন করা প্রয়োজন;  

(৩) কোনো কিছু ব্যয় না করে কাজ বা শক্তি পাওয়া সম্ভব নয়;

(৪) কাজ ও তাপ একে অপরের সমতুল্য;  

(৫) এটি শক্তির সংরক্ষণ সূত্র ছাড়া আর কিছুই নয়;  

(৬) এমন কোনো যন্ত্রের উদ্ভাবন হয় নাই যা জ্বালানি বা শক্তি ব্যতিরেকে কাজ করতে সক্ষম অর্থাৎ অনন্ত গতিযুক্ত যন্ত্র উদ্ভাবন সম্ভব নয় বা শক্তি ব্যয় না করে কোনো কাজ পাওয়া সম্ভব নয়;  

(৭) তাপকে সম্পূর্ণরুপে কাজে রুপান্তর সম্ভব নয়;  

(৮) এই সূত্র নতুন অপেক্ষক অভ্যন্তরীণ শক্তির জন্ম দিয়েছে।

৬। যান্ত্রিক সমতা বা যান্ত্রিক তুল্যতা বা যান্ত্রিক তুল্যংক এর সংজ্ঞা দাও।

উত্তরঃ এক একক তাপ উৎপন্ন করতে যতখানি কাজ সম্পূর্ণরুপে তাপে রুপান্তরিত হওয়া দরকার তাকে তাপের যান্ত্রিক সমতা বলে।

৭। তাপগতীয় প্রক্রিয়া কী?

উত্তরঃ পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে, তাপগতীয় অপেক্ষকসমূহ যে কোনো কারণে পরিবর্তন হতে পারে। যদি কোনো পরিবর্তনে তাপগতীয় অপেক্ষকের মানের পরিবর্তন হয়, তাকে তাপগতীয় প্রক্রিয়া বলে।

তাপগতীয় প্রক্রিয়া চার প্রকার। যথা- (১) সমচাপ প্রক্রিয়া (২) সমআয়তন প্রক্রিয়া (৩) সমোষ্ণ প্রক্রিয়া (৪) রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া

(৮) আপেক্ষিক তাপ, স্থির আয়তনে আপেক্ষিক তাপ, স্থির চাপে আপেক্ষিক তাপ, স্থির আয়তনে মোলার আপেক্ষিক তাপ, স্থির চাপে মোলার আপেক্ষিক তাপের সংজ্ঞা দাও।

উত্তরঃ আপেক্ষিক তাপঃ 1kg ভরের কোনো বস্তুর তাপমাত্রা 1 কেলভিন বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয় তাকে ঐ বস্তুর আপেক্ষিক তাপ বলে। আপেক্ষিক তাপকে S দিয়ে প্রকাশ করা হয়।

স্থির আয়তনে আপেক্ষিক তাপঃ স্থির আয়তনে 1kg ভরের কোনো বস্তুর তাপমাত্রা 1 কেলভিন বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয় তাকে ঐ বস্তুর স্থির আয়তনে আপেক্ষিক তাপ বলে।

স্থির চাপে আপেক্ষিক তাপঃ স্থির চাপে 1kg  ভরের কোনো বস্তুর তাপমাত্রা  1কেলভিন বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয় তাকে ঐ বস্তুর স্থির চাপে আপেক্ষিক তাপ বলে।

স্থির আয়তনে মোলার আপেক্ষিক তাপঃ স্থির আয়তনে 1 মোল কোনো গ্যাসের তাপমাত্রা  1 কেলভিন বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয় তাকে ঐ বস্তুর স্থির আয়তনে মোলার আপেক্ষিক তাপ বলে।

স্থির চাপে মোলার আপেক্ষিক তাপঃ স্থির আয়তনে 1 মোল কোনো গ্যাসের তাপমাত্রা 1 কেলভিন বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয় তাকে ঐ বস্তুর স্থির চাপে মোলার আপেক্ষিক তাপ বলে।

৯। তাপ যন্ত্র কাকে বলে?

উত্তরঃ যে যন্ত্র তাপ শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তর করতে পারে তাকে তাপ যন্ত্র বলে।

১০। কার্নো চক্র কী? [জাবি-২০১৬]

উত্তরঃ যে চক্রে কার্যকরী পদার্থ নির্দিষ্ট আয়তন, চাপ ও তাপমাত্রা হতে শুরু করে একটি সমোষ্ণ প্রসারণ ও একটি রুদ্ধতাপীয়  প্রসারণ এবং সমোষ্ণ সংকোচন ও একটি রুদ্ধতাপীয় সংকোচনের মাধ্যমে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে তাকে কার্ণো চক্র বলে।

১১। কার্নো ইঞ্জিন কী?

উত্তরঃ তাপকে কাজে রুপান্তর করার প্রেক্ষাপটে তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য ফরাসি বিজ্ঞানী সাদি কার্ণো সকল ধরণের দোষ ত্রুটিমুক্ত একটি আদর্শ ইঞ্জিন কল্পনা করেন। একে কার্ণো ইঞ্জিন বলে।

১২। কার্নো চক্রে কয়টি ধাপ রয়েছে?

উত্তরঃ কার্ণো চক্রে চারটি ধাপ আছে। যথা-

প্রথম ধাপঃ সমোষ্ণ প্রসারণ 

দ্বিতীয় ধাপঃ রুদ্ধতাপীয় প্রসারণ

তৃতীয় ধাপঃ সমোষ্ণ সংকোচন

চতুর্থ ধাপঃ রুদ্ধতাপীয় সংকোচন

১৩। প্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়ার একটি উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ নির্দিষ্ট পরিমাণ বরফ নির্দিষ্ট পরিমাণ তাপ শোষণ করে পানিতে পরিণত হয় এবং ঐ পানি হতে সমপরিমাণ তাপ অপসারণ করলে পুনরায় বরফে পরিণত হয়। এটি প্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়ার উদাহরণ।

১৪। অপ্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়ার একটি উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ প্রকৃতিতে সংঘটিত প্রায় সকল ঘটনাই অপ্রত্যাবর্তী। যেমন- বৈদ্যুতিক বর্তনীর রোধের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে তাপ উৎপন্ন হয়। এটি অপ্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়ার উদাহরণ।

১৫। তাপ ইঞ্জিনের দক্ষতা কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো তাপ ইঞ্জিন মোট যে পরিমাণ তাপকে কাজে রুপান্তর করে এবং তাপ উৎস হতে যে পরিমাণ তাপ গ্রহণ করে তার অনুপাতকে উক্ত তাপ ইঞ্জিনের দক্ষতা বলে।

১৬। কার্নোর উপপাদ্যের বিবৃতি দাও।

উত্তরঃ তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র প্রয়োগ করে বিজ্ঞানী কার্ণো দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে উপনীত হন। এই সিন্ধান্তদ্বয় কার্নোর উপপাদ্য বলে পরিচিত। এদের বর্ণনা নিম্নরূপঃ

একই তাপামত্রা পরিসরে কার্যরত কোনো ইঞ্জিনই কার্নোর ইঞ্জিন অপেক্ষা অধিক দক্ষ হতে পারে না এবং তা কার্যকরী পদার্থের উপর নির্ভরশীল নয়।

একই তাপমাত্রা পরিসরে কার্যরত সকল প্রত্যাবর্তী ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতা সমান।

১৭। তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্রের বিবৃতি দাও।  [জাবি-২০১৬]

উত্তরঃ তাপগিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্রঃ বিভিন্ন বিজ্ঞানী তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্রকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করলেও প্রত্যেক প্রস্তাবনার মূলভাব হচ্ছে “তাপ কখনই স্বতঃস্ফর্তভাবে শীতল বস্তু হতে উঞ্চ বস্তুতে স্থানান্তর হতে পারে না।” নিচে সূত্রটির বিবৃতি দেওয়া হলঃ

ক্লসিয়াসের বিবৃতিঃ বাইরের শক্তির সাহায্যে ছাড়া কোনো স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের পক্ষে নিম্ন তাপমাত্রার কোনো বস্তু হতে উচ্চ তাপমাত্রার কোনো বস্তুতে তাপের স্থানান্তর সম্ভব নয়।

কার্ণোর বিবৃতিঃ কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ তাপশক্তিকে সম্পূর্ণভাবে যান্ত্রিক শক্তিতে রুপান্তর করার মতো যন্ত্র তৈরি সম্ভব।

কেলভিনের বিবৃতিঃ “কোনো বস্তুকে এর পরিপার্শবের শীতলতম অংশ হতে অধিকতর শীতল করে শক্তির অবিরাম সরবরাহ পাওয়া সম্ভব নয়।”

১৮। এনট্রপি বলতে কী বুঝ? 

উত্তরঃ এনট্রপি হল বস্তুর একটি তাপগতীয় ভৌত ধর্ম। অভ্যন্তরীণ শক্তি বা এনথালপির মত একটি অবস্থা প্রকাশকারী ধর্ম। এর সাহায্যে কোনো সিস্টেমের অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়। একে তাপীয় জড়তা বলে। এটি তাপগতীয় রাশিসমূহের এমন একটি অপেক্ষক যা তাপ প্রবাহের দিক নির্দেশ করে। এর মান বস্তু বা সিস্টেমের বর্তমান অবস্থার উপর নির্ভর করে।

সমোষ্ণ প্রক্রিয়ায় যেমন সিস্টেমের তাপমাত্রা স্থির থাকে তেমনি রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় সিস্টেমের যে তাপীয় ধর্ম স্থির থাকে তাকে এনট্রপি বলে।

১৯। একটি সিস্টেমের বিশৃঙ্খলা বলতে কী বুঝ? এনট্রপির ভৌতিক তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর এবং দেখাও যে এটা নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিমাপক। [জাবি-২০১৬]

উত্তরঃ সিস্টেমের বিশৃঙ্খলাঃ সিস্টেমের বিশৃঙ্খলা বলতে অণুসমূহের স্বেচ্ছাধীন গতিকে বুঝায়। বস্তু তাপ গ্রহণ করলে অণুসমূহের গতিশক্তি বৃদ্ধি পায় ফলে অণুসমূহ স্বেচ্ছাধীন হয়ে পড়ে অর্থাৎ অণুসমূহের বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পায়। সুতরাং সিস্টেমের বিশৃঙ্খলা তাপশক্তিরই পরিমাপক।

এনট্রপির ভৌত তাৎপর্যঃ

(১) এনট্রপি একটি প্রাকৃতিক রাশি যার মান তাপ ও পরম তাপামাত্রার অনুপাতের সমান। 

(২) এনট্রপি একটি প্রাকৃতিক রাশি যার মান তাপ ও তাপ সঞ্চালনের দিক নির্দেশ করে।

(৩) একটি বস্তুর তাপগতীয় অবস্থা নির্ধারণে সহায়তা করে।

(৪) এনট্রপিকে বস্তুর তাপীয় জড়তা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

(৫) এটি তাপমাত্রা, চাপ, আয়তন, অভ্যন্তরীণ শক্তি ইত্যাদিএর ন্যায় কোনো বস্তুর অবস্থা প্রকাশ করে।

(৬) এটিকে কোনো ভৌত রাশির দ্বারা প্রকাশ করা যায় না।

(৭) এনট্রপি বৃদ্ধি পেলে বস্তু শৃঙ্খল অবস্থা হতে বিশৃঙ্খল অবস্থা প্রাপ্ত হয়।

(৮) তাপমাত্রা ও চাপের ন্যায় একে অনুভব করা যায় না।

(৯) একে ক্যালরি/ডিগ্রী এককে প্রকাশ করা হয়।

এনট্রপি নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিমাপকঃ কোনোবস্তু তাপ গ্রহণ করলে অণুসমূহের গতিশক্তি বৃদ্ধি পায় ফলে অণুসমূহ স্বেচ্ছাধীন হয়ে পড়ে অর্থাৎ অণুসমূহের বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পায়। সুতরাং সিস্টেমের বিশৃঙ্খলা তাপশক্তিরই পরিমাপক। আবার কোনো বস্তু তাপগ্রহণ করলে এর এনট্রপি বৃদ্ধি পায়। তাই বলা যায় বস্তু বা সিস্টেমের এনট্রপি বৃদ্ধি সিস্টেমের বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধিরই নামান্তর। শুধু তাই নয় মহাবিশ্বের সকল স্বতঃস্ফূর্ত ঘটনাই এনট্রপি বৃদ্ধি করে। এনট্রপি যখন একটি চরম মানে পৌছবে তখন সকল বস্তু তাপীয় সাম্যাবস্থায় পৌছবে। ফলে সিস্টেম কাজ করার বা শক্তি রুপান্তরের অক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। মহাবিশ্বের এই অবস্থাকে বলা হয় জগতের তাপীয় মৃত্যু। তাই বলা যায়, এনট্রপি নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিমাপক।

২০। এনট্রপি কী? [জাবি-২০১৬]

উত্তরঃ সমোষ্ণ প্রক্রিয়ায় যেমন সিস্টেমের তাপমাত্রা স্থির থাকে তেমনি রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় সিস্টেমের যে তাপীয় ধর্ম স্থির থাকে তাকে এনট্রপি বলে।

২১। সুপ্ততাপ কী? [জাবি-২০১৬]

উত্তরঃ তাপমাত্রা স্থির রেখে কোনো বস্তু তার গলন বা স্ফটনের সময় যে তাপ গ্রহণ অথবা বর্জন করে তাকে সুপ্ততাপ বলে।

সুপ্ততাপ পদার্থের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে নয় বরং পদার্থের অবস্থা পরিবর্তনে ব্যবহৃত হয়।

২২। দশা সূত্রটি বিবৃত কর। [জাবি-২০১৪]

উত্তরঃ কোনো ব্যবস্থার উপর প্রভাব সৃষ্টিকারী বিভিন্ন পারিপার্শিক বিষয়ের মধ্যে (যেমন, তলটান, সান্দ্রতা, স্থিতিস্থাপকতা, অভিকর্ষ ইত্যাদি) শুধু চাপ ও উঞ্চতার বিষয় বিবেচনাকালে দশা ও স্বাধীন ভেদক সংখ্যার সমষ্টি এর উপাদান সংখ্যা অপেক্ষা দুই বেশি। এটাই দশা সূত্র নামে পরিচিত। গাণিতিকভাবে,

\large {\color{Blue} P+F=C+2}

এখানে, P হল ব্যবস্থার দশা সংখ্যা,  F স্বাধীন ভেদক সংখ্যা এবং  C হল উপাদান সংখ্যা। 

২৩। নার্নস্টের উপপাদ্য লিখ।

উত্তরঃ শুন্য কেলভিন তাপমাত্রায় বিক্রিয়ক এবং বিক্রিয়ালব্ধ পদার্থের তাপ ধারণ ক্ষমতা সমান হয়। গাণিতিকভাবে,

\large {\color{Blue} Li{m_{t \to 0}}\Delta {C_p} = 0}

২৪। ক্লসিয়াস-ক্লাপিরণ সমীকরণ লিখ।

উত্তরঃ ক্লসিয়াস-ক্লাপিরণ সমীকরণ বা তুপ্ততাপের দ্বিতীয় সমীকরণকে নিম্নরুপে প্রকাশ করা যায়-

\large {\color{Blue} \frac{{dP}}{{dT}} = \frac{L}{{T\left( {{v_1} - {v_2}} \right)}}}

২৫। তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সুত্রের গাণিতিক রুপ লিখ।

উত্তরঃ

\large {\color{Blue} d\theta = Tds}

২৬। ক্লসিয়াস উপপাদ্য বিবৃত কর।

উত্তরঃ কোনো প্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়ায় এনট্রপি স্থির থাকে।

২৭। রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া কাকে বলে? [জাবি-২০১৬]

উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় সিস্টেমের সাথে পরিবেশের তাপের আদান-প্রদান হয় বলে সিস্টমের তাপমাত্রার পরিবর্তন হয় তাকে রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া বলে।

২৮। সমোঞ্চ প্রক্রিয়া/পরিবর্তন কাকে বলে?

উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় সিস্টেমের সাথে পরিবেশের তাপের আদান-প্রদান হয় ফলে সিস্টেমের তাপমাত্রা স্থির থাকে তাকে সমোঞ্চ প্রক্রিয়া/পরিবর্তন বলে।

২৯। সমোঞ্চ পরিবর্তন এবং রুদ্ধতাপীয় পরিবর্তনের সাথে পার্থক্য কর। [জাবি-২০০৬]

উত্তরঃ

সমোঞ্চ প্রক্রিয়ারুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া
১। স্থির তাপমাত্রায় যে প্রক্রিয়া সংঘটিত হয় তাকে সমোঞ্চ প্রক্রিয়া বলে।১। যে প্রক্রিয়ায় পরিবেশের সাথে ব্যবস্থার তাপের আদান-প্রদান হয় না তাকে রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া বলে।
২। সমোঞ্চ প্রক্রিয়ায় তাপমাত্রা স্থির থাকে। ২। রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় তাপমাত্রা পরিবর্তিত হয়। 
৩। এটা ধীর গতির প্রক্রিয়া। ৩। এটা দ্রুত গতির প্রক্রিয়া। 
৪। পাত্রের দেয়াল এবং পিস্টন তাপ সুপরিবাহী পদার্থ দিয়ে তৈরি হতে হয়।  ৪। পাত্রের দেয়াল এবং পিস্টন তাপ কুপরিবাহী পদার্থ দিয়ে তৈরি হতে হয়। 
৫। এ প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য কার্যনির্বাহী পদার্থকে যে পাত্রে নেয়া হয় তাঁর চতুর্পার্শ্বস্থ মাধ্যমের তাপ গ্রহীতা উচ্চ হতে হয়। ৫। এ প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য পাত্রের চতুর্পার্শ্বস্থ মাধ্যমের তাপ গ্রহীতা নিম্ন হতে হয়।
৬। এই পরিবর্তনে  হয়।  ৬। এই পরিবর্তনে  হয়।
৭। সমোষ্ণ লেখ কম খাড়া৭। রুদ্ধতাপীয় লেখ সমোষ্ণ লেখের চেয়ে গামা গুণ খাড়া

One response to “জানার আছে অনেক কিছু (তাপগতিবিদ্যা)!!!”

  1. jk says:

    খুবই ভালো কাজ করেছেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *