জানার আছে অনেক কিছু (বলবিদ্যা)!!!


১। বল কাকে বলে?

উত্তরঃ যে বাহ্যিক কারণ (ধর্ম) স্থির বা গতিশীল বস্তুর অবস্থার পরিবর্তন ঘটায় বা ঘটাতে চায় তাকে বল বলে?

২। মৌলিক বল কাকে বলে?

উত্তরঃ যে সকল বল অন্যান্য বল থেকে উৎপন্ন হয় না এবং অন্য কোনো বলের রুপ বা রুপান্তর নয় বরং অন্যান্য বল এই সকল বলের কোনো না কোনো রুপের প্রকাশ, সে সকল বলকে মৌলিক বল বলে।

৩। মৌলিক বল কত প্রকার ও কী কী?

উত্তরঃ মৌলিক বল চার প্রকার যথা-

(১) মহাকর্ষ বল;

(২) তাড়িতচৌম্বক বল;

(৩) সবল নিউক্লিয় বল;

(৪) দুর্বল নিউক্লিয় বল।

৪। বলের ভারসাম্য বলতে কী বুঝ?

উত্তরঃ দুই বা ততোধিক বল একই সময়ে কোনো বস্তুর উপর ক্রিয়ার ফলে বস্তুটি যদি স্থির থাকে অর্থাৎ, বস্তুর উপর প্রযুক্ত বলগুলোর লব্ধি যদি শূন্য হয়, তবে তাকে বলের ভারসাম্য বলে।

৫। ঘাত বল কাকে বলে?

উত্তরঃ খুব অল্প সময়ের জন্য কোনো বস্তুর উপর প্রচণ্ড বল প্রয়োগ করা হলে এ বলকে ঘাত বল বলে।

৬। বলের ঘাত কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো বস্তুর প্রযুক্ত বল এবং বলের ক্রিয়াকালের গুণফলকে বলের ঘাত বলে।

৭। ভরবেগ কাকে বলে?

উত্তরঃ ভর ও বেগের সমন্বয়ে যে ধর্মের উদ্ভব হয় তাকে বস্তুর ভরবেগ বলে।

অথাব,

কোনো বস্তুর ভর এবং বেগের গুণফলকে ভরবেগ বলা হয়।

৮। ঘর্ষণ বল কাকে বলে?

উত্তরঃ যখন একটি বস্তু অপর একটি বস্তুর সংস্পর্শে থেকে চলতে থাকে বা চলার চেষ্টা করে তখন বস্তুদ্বয়ের স্পর্শতলে গতির বিপরীতে যে বাধার উৎপত্তি হয় তাকে ঘর্ষণ বল বলে।

৯। ঘর্ষণ বল কত প্রকার ও কী কী?

উত্তরঃ ঘর্ষণ বল চারপ্রকার যথা-

(১) স্থিতি ঘর্ষণ;

(২) গতীয় ঘর্ষণ;

(৩) আবর্ত ঘর্ষণ;

(৪) প্রবাহী ঘর্ষণ।

১০। স্থিতি ঘর্ষণ কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো তল অপর একটি তলের সংস্পর্শে থেকে যখন গতিশীল হওয়ার চেষ্টা করেও গতিশীল হতে পারে না, তখন একতল অপর তলের গতির চেষ্টার বিরুদ্ধে যে বল প্রয়োগ করে তাকে স্থিতি ঘর্ষণ বলে।

১১। গতিয় ঘর্ষণ বল কাকে বলে?

উত্তরঃ দুটি স্পর্শ তলের মধ্যে যখন আপেক্ষিক গতি থাকে, তখন এদের মধ্যে যে ঘর্ষণ বল ক্রিয়া করে তাকে চল বা গতীয় ঘর্ষণ বল বলে।

১২। স্থিতি ঘর্ষণ গুণাংক কাকে বলে?

উত্তরঃ দুটি বস্তু পরস্পরের সংস্পর্শে থাকলে স্থিতি ঘর্ষণের সীমাস্থ মান এবং অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়ার অনুপাতকে স্থিতি ঘর্ষণ গুণাংক বলে।

১৩। ঘর্ষণ কোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ সীমাস্থ ঘর্ষণের ক্ষেত্রে অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া ও ঘর্ষণ বলের লব্ধি অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়ার সাথে যে কোণ উৎপন্ন করে তাকে ঘর্ষণ কোণ বলে।

১৪। স্থিতি কোণ বা নিশ্চল কোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ নতির কোণের সর্বোচ্চ যে মানে নত তলের ওপর রাখা কোনো বস্তু নিজের ওজনের ক্রিয়ার নিচের দিকে গতিশীল হবার উপক্রম হয় তাকে স্থিতি বা নিশ্চল কোণ বলে।

১৫। গতীয় বা চল ঘর্ষণ গুণাংক কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো বস্তু যখন অপর একটি বস্তুর ওপর দিয়ে স্থির বেগে চলতে থাকে তখন গতীয় ঘর্ষণ বল ও অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়ার অনুপাতকে গতীয় ঘর্ষণ গুণাংক বলে।

১৬। আবর্ত ঘর্ষণ কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো বস্তু একটি তলের সংস্পর্শে থেকে যখন তলটির সাপেক্ষে আবর্ত (ঘূর্ণায়মান থেকে) গতিতে গতিশীল হয় তখন তলটি বস্তুটির গতির বিরুদ্ধে যে বল প্রয়োগ করে তাকে আবর্ত ঘর্ষণ বলে।

১৭। নিউটনের গতির প্রথম সূত্রের বিবৃতি দাও।

উত্তরঃ কোনো বস্তুর উপর বাহ্যিক বল প্রয়োগ করা না হলে, স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকে এবং গতিশীল বস্তু সমবেগে সরলরেখায় চলতে থাকে।

১৮। জড়াতা কাকে বলে?

উত্তরঃ স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকার যে প্রবণতা বা গতিশীল বস্তুর চিরকাল গতিশীল থাকার যে প্রবণতা বা ধর্মকে জড়তা বলে।

১৯। স্থিতি জড়তা কাকে বলে?

উত্তরঃ স্থির বস্তুর চিরকাল স্থির থাকার প্রবণতাকে স্থিতি জড়তা বলে।

২০। গতি জড়তা কাকে বলে? ‘

উত্তরঃ গতিশীল বস্তুর চিরকাল গতিশীল থাকার প্রবণতা বা ধর্মকে গতি জড়তা বলে।

২১। নিউটনের গতির দ্বিতীয় সূত্রের বিবৃতি দাও।

উত্তরঃ কোনো বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং প্রযুক্ত বল যেদিকে ক্রিয়াকরে ভরবেগের পরিবর্তনও সেদিকেই ঘটে।

২২। নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্রের বিবৃতি দাও।

উত্তরঃ প্রত্যেক ক্রিয়ার একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।

২৩। রৈখিক ভরবেগের নিত্যতা সূত্রের বিবৃতি দাও। অথবা, ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্রের বিবৃতি দাও।

উত্তরঃ দুই বা ততোধিক বস্তুতে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ছাড়া অন্য কোনো বল বাহ্যিক বল ক্রিয়া না করলে কোনো নির্দিষ্ট দিকে বস্তুগুলোর মোট ভরবেগের কোনো পরিবর্তন হবে না।

২৪। জড়তার ভ্রামক কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো নির্দিষ্ট অক্ষের চারদিকে ঘূর্ণায়মান কোনো দৃঢ় বস্তুর প্রতিটি কণার ভর এবং ঘূর্ণন অক্ষ থেকে আনুষঙ্গিক কণার লম্ব দূরত্বের গুণফলের সমষ্টিকে ঐ অক্ষ সাপেক্ষে জড়তার ভ্রামক বলে।

২৫। চক্রগতির ব্যাসার্ধ কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো দৃঢ় বস্তুর সমগ্র ভর যদি একটি বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত করা যায় যাতে করে একটি নির্দিষ্ট অক্ষের সাপেক্ষে ঐ কেন্দ্রীভূত বস্তুকণার জড়তার ভ্রামক, ঐ নির্দিষ্ট অক্ষের সাপেক্ষে সমগ্র দৃঢ় বস্তুর জড়তার ভ্রামকের সমান হয়, তাহলে ঐ নির্দিষ্ট অক্ষ হতে কেন্দ্রীভুত বস্তুকণার লম্ব দূরত্বকে চক্রগতির ব্যাসার্ধ বলে।

২৬। কৌণিক ভরবেগ কাকে বলে?

উত্তরঃ ঘূর্ণায়মান বস্তুকণার অবস্থান ভেক্টর (ঘূর্ণন অক্ষ হতে দূরত্ব) এবং বস্তুকণার রৈখিক ভরবেগের ক্রসগুণফলকে কৌণিক ভরবেগ বলে।

অথবা,

ঘূর্ণায়মান বস্তুকণার জড়তার ভ্রামক এবং কৌণিক বেগের গুণফলকে কৌণিক ভরবেগ বলে।

২৭। টর্ক কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো বস্তুর অবস্থান ভেক্টর এবং ঐ বস্তুর উপর ক্রিয়াশীল বলের ক্রসগুণফলকে টর্ক বলে।

২৮। কৌণিক ভরবেগের নিত্যতা সূত্রের বিবৃতি দাও। অথাবা, কৌণিক ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্রের বিবৃতি দাও।

উত্তরঃ কোনো ঘূর্ণায়মান বস্তুর উপর বাহ্যিক টর্কের ক্রিয়া না থাকলে বস্তুটির মোট কৌণিক ভরবেগের কোনো পরিবর্তন হবে না।

২৯। কেন্দ্রমুখী বল কাকে বলে?

উত্তরঃ বৃত্তাকার পথে গতিশীল বস্তু কেন্দ্রের দিকে যে বল লাভ করে তাকে কেন্দ্রমুখী বল বলে।

৩০। রাস্তার ব্যাংকিং কাকে বলে?

উত্তরঃ রাস্তার বাঁকে যাতে মোটর যান (বাস, ট্রাক, কার) যাতে নিরাপদে মোড় নিতে পারে সেজন্য রাস্তার বাঁকের ভিতেরর পাড় বাইরের পাড় থেকে কিছুটা ঢালু থাকে, এ ঘটনাকে রাস্তার ব্যাংকিং বলে।

৩১। সংঘর্ষ কাকে বলে?

উত্তরঃ অতি অল্প সময়ের জন্য কোনো বৃহৎ বল ক্রিয়া করে গতির হঠাৎ ও ব্যাপক পরিবর্তন করাকে সংঘর্ষ বলে।

৩২। স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে সংঘর্ষে বস্তুসমূহের মোট গতিশক্তি ও মোট ভরবেগ অপরিবর্তিত থাকে এবং সংঘর্ষের পর বস্তুসমূহ আলাদা থাকে, তাকে স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ বলে।

৩৩। অস্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে সংঘর্ষে বস্তুসমূহের মোট গতিশক্তি অপরিবর্তিত থাকে না কিন্তু মোট ভরবেগ অপরিবর্তিত থাকে এবং সংঘর্ষের পর বস্তুসমূহ পরস্পরের সাথে সংযুক্ত হয়ে একই বেগে চলতে থাকে তাকে অস্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ বলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.