ভবিষ্যতের তার-ছেড়া প্রযুক্তি

মার্কনী না জগদীশ চন্দ্র বসু? এই বিতর্কের এখন আর সময় নেই। ন-তার বা বেতার বা ওয়ারলেস প্রযুক্তি আপনি যাই বলুন না কেন আমি তার নাম দিয়েছি তার-ছেড়া প্রযুক্তি। নামকরণের সার্থকতা আপনার কাছে ছেড়ে দিয়ে আসল কাহিনীতে আসি। মানুষের তার ছিড়ে গেলে তাকে পাগল বলি। কিন্তু প্রযুক্তির তার ছিড়ে গেলে তার দাম বেড়ে যায়। কীভাবে? জানতে হলে ধৈর্য্য ধরে পড়ুন। আর আপনার মতামতটি কমেন্টবক্সে লিখুন। আপনার মূল্যবান মতামত আমাকে লিখতে উৎসাহিত করবে।
মুহুর্তের মধ্যেই আপনি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে অবস্থিত আপনার প্রিয়জনের সাথে ভাবের আদান প্রদান করছেন। কিন্তু কখনো কী ভেবে দেখেছেন, তা কীভাবে সম্ভব হচ্ছে! মনে মনে ভাবছেন হয়ত ইন্টারনেট বা এই ওয়ারলেস কমিউনিকেশনের কথা। হ্যাঁ, আপনি ঠিক ধরেছেন। প্রযুক্তিগত ভাবে আপনি ঠিক উত্তর দিয়েছেন। কিন্তু আপনার বা আমার কথা যখন বাতাসের মধ্যে দিয়ে যখন যাচ্ছে তখন পরিবেশের মধ্যে বিদ্যমান অন্যান্য শব্দ যেমন পাখির কলরব, নদীর কলতান, সমুদ্রের গর্জন কীংবা মেঘের ঢাক-ঢাক গুড়-গুড় শব্দ আপনার কথার সাথে মিশে যাচ্ছে না কেন? এর পিছনে সায়েন্সটা কী?
আমরা যখন চিঠি পাঠাই তখন তা একটি খাম বা এনভেলোপের মধ্যে ভরে পোস্ট করে দেই। যদি খাম বা এনভেলোপ ব্যবহার না করি তাহলে কী সমস্যা হতে পারে? যে কেউ চিঠির লেখাটা পড়তে পারবে বা চিঠিতে নতুন কিছু লিখতে পারবে ফলে চিঠির তথ্যবিভ্রাট ঘটবে। প্রাপকের কাছে ভুল তথ্য পৌছার সম্ভাবনা থাকবে।
মোবাইলে বা মেসেঞ্জার বা হোয়াটসএপে কথা বলার সময় তাই ঘটে থাকে। প্রথমে আমার কথা/টেক্সট/ভিডিও ইত্যাদি তথ্যকে ইনভেলোপ নামক একটি হাই ফ্রিকোয়েন্সি ক্যারিয়ার সিগন্যালের সাথে মিক্সড করতে হয়। এটাকেই মডুলেশন বলে।
হাই ফ্রিকোয়েন্সি কী? এটাতো বুঝলাম না।
এবার আসি ফিকোয়েন্সিতে। আমরা অনেক ছোটবেলায় বিজ্ঞান বইতে পড়েছি যে কম্পন ছাড়া শব্দ সৃষ্টি হয় না। আবার সৃষ্ট শব্দ যখন আমাদের কানের টিম্পেনিক নামক পর্দায় আঘাত করে সেখানে কম্পনের সৃষ্টি করে ফলে সেই শব্দ আমাদের ব্রেইনে অনুভূতির সৃষ্টি করে। আমরা শব্দ শুনতে পাই। প্রতিটি শব্দ বাতাসে বা মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে একটি নির্দিষ্ট মাত্রার কম্পন/ভাইব্রেশন সৃষ্টি করে। প্রতি সেকেন্ডে কম্পনের সঙ্খ্যাকেই ফ্রিকোয়েন্সি বা কম্পাংক বলে। যেমন ধরুন আমি হ্যালো শব্দটি উচ্চারণ করলাম। এতে কী হল। হ্যা বলার কারণে বাতাসের বা মাধ্যমের কণা প্রতি সেকেডে ৫০ থেকে ১০০ বার কম্পিত হয়েছে। লো বলার কারণে হয়ত প্রতি সেকেন্ডে ৬০-৯০ বার কম্পিত হয়েছে। প্রশ্ন হতে পারে কম্পন/ভাইব্রেশন সংখ্যা বা ফ্রিকোয়েন্সি কী নির্দিষ্ট সংখ্যা হতে পারে? হ্যাঁ, অবশ্যই সেটি একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা। তবে এক এক মানুষের ক্ষেত্রে একই শব্দ বলার ক্ষেত্রে কম্পন/ভাইব্রেশন সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। যেমন লিমন যদি হ্যালো বলে তাহলে কম্পন/ভাইব্রেশন সঙ্খ্যা যদি ৬০ (হ্যা),৭০ (লো) হয়, তার যমজ ভাই রিমন যদি হ্যালো বলে তাহলে প্রতি সেকেন্ডে কম্পন সংখ্যা ৬৫, ৭৫ হতে পারে।
একই শব্দ উচ্চারণে ভিন্ন ভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে প্রতি সেকেন্ডে কম্পন সংখ্যা ভিন্ন হয়। এজন্যই একেকে মানুষের গলার স্বর একেক ধরণের হয়ে থাকে।
এবার ধরুন, আমি যন্ত্রের সাহায্যে বাতাসে ৬৫, ৭৫ মাত্রার কম্পন/ভাইব্রেশন সৃষ্টি করলাম। তাহলে পাঠক বলুন তো কার স্বর শোনা যাবে? হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন। রিমনের গলার স্বরে হ্যালো শোনা যাবে অর্থাৎ মনে হবে যেন রিমন যেন হ্যালো বলল। প্রিয় পাঠক, ইতোমধ্যেই আমি ভয়েস কমিউনিকেশনের মূল আলোচনা শেষ করেছি। বুঝতে না পারলে উপরের উদাহরণগুলো দয়া করে আরোও একবার পড়ে নিন।
আমরা বুঝলাম যে কথা বলার সময় যে ধরণের শব্দ তৈরি করি তাদের ফ্রিকোয়েন্সি অনেক কম থাকেঃ এই ধরুন মোটামুটি ১০০০ হার্জের মধ্যে থাকে। ও আচ্ছা বলতে ভুলে গেছি, হার্জ হল ফ্রিকোয়েন্সির একক। এখন লো ফ্রিকোয়েন্সির এই শব্দ তরঙ্গ বাতাসের মধ্যে দিয়ে পাঠিয়ে দিলে কয়েকশো কিলোমিটার তো দূরের কথা কয়েকশো মিটারের মধ্যে তা হারিয়ে যাবে। রিসিভার/গ্রাহক প্রান্তে তা পৌছবে না। এছাড়াও তখন আপনার কথার সাথে অন্যান্য শব্দ যেমন পাখির কলরব, নদীর কলতান, মেঘের গর্জন যুক্ত হবে এবং গ্রাহক যন্ত্রে নয়েজ ছাড়া আর কিছুই শোনা যাবে না। একারণেই হাই ফ্রিকোয়েন্সি সিগনালের প্রয়োজন হয় যাকে আমি এই আর্টিকেলে এনভেলোপের সাথে তুলনা করেছি।
আরোও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, সেটি হল তথ্য পাঠানোর সময়। কথা/তথ্য (একাধিক শব্দ) যদি শব্দের গতিতে পাঠানো হয় তাহলে সেটি প্রতি সেকেন্ডে ৩৩২ মিটার যাবে (মাধ্যমের তাপমাত্রা যদি শুন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়)। এই গতিতে ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আপনার প্রিয়জনের কাছে আপনার কথা/তথ্য পৌছতে সময় লাগবে ৯০৪ সেকেন্ড বা প্রায় ১৫ মিনিট। এর ফলে ফোন-কলের শুরুতে আপনি যদি বলেন, হ্যালো, আম্মু কেমন আছ? আম্মুর প্রতিউত্তর শুনতে মোটামুটি ৩০ মিনিট আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। এই ধরণের তার-ছেড়া প্রযুক্তির দরকার নেই। সেকারণে তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ বা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ বা আলোক তরঙ্গের প্রয়োজন হয় যা একই সাথে উচ্চ মাত্রার কম্পাঙ্ক/ফ্রিকোয়েন্সি এবং হাইস্পিড কমিউনিকেশনের মূল উপাদান।
এতক্ষণের আলোচনায় এই দাড়াল যে শব্দ তরঙ্গগুলোকে উচ্চফ্রকোয়েন্সির সাথে মিক্সড (মডুলেশন) করে ট্রান্সমিট করা হয়। এর ফলে অদৃশ্য আলোর মাধ্যমে কমিউনিকেশন হয় বলে বাতাসে বিদ্যমান অন্যান্য লো ফ্রিকোয়েন্সির সাথে ইন্টারফেয়ার না করেই গ্রাহকের কাছে তথ্য পৌছে যায়। অপরদিকে গ্রাহকযন্ত্র সেই মডুলেটেড সিগনাল (ক্যারিয়ার সিগনালের সাথে মিশ্রিত তথ্য) গ্রহণ করে বিশেষ উপায়ে ক্যারিয়ার সিগনালকে ভূমিতে পাঠিয়ে তথ্য/শব্দ তরঙ্গগুলোকে আলাদা করে স্পিকারে পাঠিয়ে দেয়। স্পিকারের কথা আগেই বলেছি যে গৃহীত তথ্যগুলো স্পিকারের ডায়াফ্রেম পর্দায় আঘাত করে কম্পন/ভাইব্রেশন সৃষ্টি করে। এখানে অবশ্যই প্রেরক মানে আপনি মোবাইলে কথা বলার সময় বাতাসে/মাইক্রোফোনে যে যে ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ তৈরী করেছিলেন, স্পিকারেও সেই সেই মানের ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ তৈরী হবে। সরলকথায় বলা যায় যে গ্রাহক যন্ত্র মানে আপনার আম্মুর মোবাইল ফোনে যুক্ত স্পিকারে আপনার কথা শোনা যাবে। এই হল কথা/শব্দ তরঙ্গ পাঠানোর তার-ছেড়া পদ্ধতি।
এবার আসি টেক্সট মেসেজ, ছবি কিংবা ভিডিও পাঠানোর প্রযক্তির আলোচনায়। আপনি হয়তো বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির কথা জেনে থাকবেন। যদি জানা না থাকে তাহলে এখানে ক্লিক করে জেনে নিন। এক্ষেত্রে আসবে ডিজিটাল তার-ছেড়া প্রযুক্তি। উদাহরণ দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করছি। ((মনযোগ হারাবেন না দয়া করে। খারাপ লাগলে চা বা ঠান্ডা কিছু খেয়ে এসে আবার পড়ুন। আপনার চায়ের বা ঠান্ডা খাবারের দাম যদি কখনো দেখা হয় আমি না হয় দিয়ে দিব!!! ফান করলাম।)) প্রতিটি লেটার/পিক্সেল কে প্রথমে বাইনারি সংখ্যায় যেমন ১০০১০১০ ইত্যাদি এধরণের নাম্বারে রুপান্তর করা হয়, তারপর সেই সংখ্যা অনুযায়ী তৈরী হয় ডিজিটাল সিগন্যাল। ডিজিটাল সিগন্যাল গুলোকে বাইনারি সংখ্যার মান অনুযায়ী নির্দিষ্ট ফ্রকোয়েন্সির এনালগ সিগনালে রুপান্তর করা হয়। এরপর ক্যারিয়ার সিগন্যালের সাথে মিক্সড করে ওয়ারলেস বা ক্যাবল মিডিয়ার মধ্যে গ্রাহকের দিকে পাঠানো হয়। গ্রাহক যন্ত্র প্রেরক যন্ত্রের বিপরীতভাবে কাজ করে। প্রথমে এনালগ সিগন্যালকে ডিজিটাল সিগন্যালে রুপান্তর করে। ডিজিটাল সিগন্যাল থেকে বাইনারি নাম্বার তৈরী হয়। যেহেতু প্রতিটি লেটার/পিক্সেলের রং এর জন্য বাইনারি নাম্বার নির্দিষ্ট করা আছে, সেকারণে আপনার ডিজিটাল ডিভাইস (মোবাইল/কম্পিউটার) বাইনারি নাম্বারগুলোকে লেটার/পিক্সেলে রুপান্তর করে পাঠানো তথ্যকে ডিকোড করে মানুষের বোধগম্য ভাষায় রুপান্তর করে। আমরা মেসেজটা হুবুহু পড়তে পারি। এই হল তার-ছেড়া প্রযুক্তির ভিতরের কাহিনী বা সায়েন্স।
এবার আসি আমি কেন বেতার কে তার-ছেড়া বলছি। বেতার বলতে বুঝায় যে কোনো তার/কেবল ব্যবহার করা হয় নাই। কিন্তু বর্তমানে ওয়ারলেস কমিউনিকেশনে একেবারে যে তার ব্যবহার করা হয় না, তা কিন্তু নয়। কখনো তার/ক্যাবল যেমন অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা হয় আবার কোথাও কোথাও তার/ক্যাবল ব্যবহার করা হয় না। তার মানে কি দাড়াল? প্রথমে কিছু দূর তার আছে, এরপর তার নেই, তারপর শেষের দিকে আবার তার আছে। এটাতো তার নয় যেন ছেড়া তার। তাই বলি তার-ছেড়া প্রযুক্তি।
এখন তাকাই ভবিষ্যতের দিকে। ভবিষ্যতে কেমন হতে পারে এই তারবিহীন প্রযুক্তির তার-ছেড়া রুপ। বর্তমানে তথ্যকে ওয়ালেস-মিডিয়ার মধ্যে দিয়ে পাঠানো হচ্ছে। ভবিষ্যতে হয়ত পাওয়ার বা বিদ্যুৎকে ওয়ারলেস মিডিয়ার মধ্যে পাঠানো সম্ভব হবে। বৈদ্যুতিক যন্ত্রগুলোকে যেমন ফ্রিজ, টিভি, বাল্ব, এসি ইত্যাদিগুলোকে আর তারের মাধ্যমে গ্রিডের সাথে বা ব্যাটারির সাথে কানেক্ট/প্লাগ ইন করতে হবে না। ইলেক্ট্রিসিটি বা বিদ্যুৎকে ডিজিটাল কমিউনিকেশনের মত পাওয়ার স্টেশন হতে পাঠানো হবে দূর থেকে দূরান্তরে। জেনারেটর বা সোলার প্যানেল বা বায়ুকলের মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুৎশক্তিকে প্রথমে মডুলেটেড করে ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে পাঠানো হবে। কয়েকশো কিলোমিটার তারবিহীন মাধ্যম অতিক্রম করে বিদ্যুৎশক্তি গ্রাহক যন্ত্রে পৌছবে। সেখানে ডিমডুলেট করে ইলেক্ট্রিক যন্ত্রের জন্য ব্যবহার উপযোগী করা হবে এবং আবার বিদ্যুৎ তারবিহীন মাধ্যমে অতিক্রম করে পৌছে যাবে বৈদ্যতিক বাল্বে, বা বৈদ্যুতিক পাখায়। দরকার হবে না কোনো পাওয়ার ক্যাবলের। আপনি হয়ত মনে মনে ভাবছেন এখানেও কী পাসওয়ার্ড প্রটেকশন থাকবে? হ্যাঁ, অবশ্যই। আপনার বাড়ির ইলেক্ট্রিক যন্ত্রগুলো শুধু আপনার জন্য ক্রয়কৃত পাওয়ার-ওয়াইফাই এ যুক্ত হবে নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে।
আপনি প্রাইভেট কার চালাচ্ছেন। কারটি হবে ব্যাটারি চালিত। কার ব্যাটারিকে চার্জ দেওয়ার জন্য আপনাকে পাওয়ার স্টেশনে পার্ক করে চার্জারের মাধ্যমে প্লাগ-ইন করতে হবে না। চলন্ত অবস্থায় তার-ছেড়া প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রাইভেট কারের ব্যাটারি চার্জিত হবে। প্লাগ-ইন করতে হবে না আপনার স্মার্ট ফোন কিংবা ল্যাপটপ বা ডেস্কটপটিকেও। শুধু তাই নয়, গাড়ি বা ভবনের দেয়াল কিংবা ছাঁদ ছাড়াও আপনার পরিহিত পোশাকে লাগানো হবে অর্গানিক সোলার সেল। হাত দিয়ে স্পর্শ করে সেটিকে ধরতে পারবেন না। কারণ সোলার সেলটি হবে একধরণের রঙ। পোশাকটি ডায়িং করার সময় রঙ মিশিয়ে সোলার সেল লাগানো হবে, পোশাকটি পানিতে পরিষ্কার করলেও সেটির কার্যকারিতা অক্ষুন্ন থাকবে হয়ত। এমনকি সোলার সেলটি দক্ষতা এত বেশি থাকবে যে অতি নিম্ন তীব্রতার আলো/বাতাস/বৃষ্টির ফোটা/পারিপার্শিক নয়েজ থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। স্মার্ট ফোনের ব্যাটারি উৎপাদিত সেই বিদ্যুৎ তার-ছেড়া প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রহণ করে চার্জিত হবে।
তার-ছেড়া প্রযুক্তির আর একটু অগ্রসর হলে হয়ত দেখতে পারব যে টিভি বা ল্যাপটপের ডিস্প্লেতে ব্যভৃত হচ্ছে না কোনো এলসিডি (LCD) বা এল ই ডি (LED) নামক অর্ধপরিবাহী পদার্থের কোনো উপাদান। এর পরিবর্তে শুধু সেখানে থাকবে চতুর্ভুজ আকৃতির মেটালিক ফ্রেম। ফ্রেমের মাঝখানে শুন্যস্থান, থাকবে শুধু বাতাসের কণা। তবে পিছনের বস্তু আড়াল করার জন্য ব্যবহৃত হবে সাদা বা কালো রঙ্গের পর্দা। চতুর্ভূজ আকৃতির সেই শুন্যস্থানেই দেখা যাবে ছবি, লেখা কিংবা ভিডিও। এর মধ্যে হাত রাখলে হয়ত হাতের উপরেই লেখা বা ছবি ভেসে উঠবে। আর একটু অগ্রসর হলে দেখতে পাব ইলেক্ট্রিক-তার-ছেড়া কলম। যে কলম ব্যবহার করে বাতাসের মধ্যেই লেখা যাবে। সম্মানীত শিক্ষকগণকে ব্যবহার করতে হবে না মার্কার পেন। সাদা বা কালো পর্দার উপরে বাতাসের মধ্যেই লিখতে পারবেন। তবে সেই লেখা/ছবিগুলোকে কতক্ষণ স্থায়ী করা যাবে সেটা নিয়ে ইলেক্ট্রনিকস প্রযুক্তি-উদ্ভাবকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যাবে। লেখা যত বেশিক্ষণ স্থায়ী হবে তত দাম বেশি হবে।
প্রিয় পাঠক, সময়ের অভাবে এখানেই থামতে হল। জীবন ক্ষণস্থায়ী। তাই তারবিহীন প্রযুক্তির সেই তার-ছেড়া রুপ দেখার সৌভাগ্য যাদের হবে; তাদের জন্য রইল অগ্রীম অভিনন্দন।
আপনার মূল্যবান মতামত কমেন্ট বক্সে লিখুন। ভাল লাগলে ফেসবুক বা শেয়ার আইকনে ক্লিক করে শেয়ার করুন। নিজে জানুন, অপরকে জানার সুযোগ করে দিন। ধন্যবাদ।
লেখক
মোঃ দেলোয়ার হোসেন, প্রভাষক পদার্থবিদ্যা
ওএসডি, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক অধিদপ্তর, ঢাকা।
সবই একসম তার ছাড়া বা তার ছেঁড়া হিয়ে যাবে।
ঠিক বলেছো বন্ধু।
অসাধারণ স্যার।