জানার আছে অনেক কিছু!!!


জ্ঞান এবং অনুধাবনমূলক প্রশ্নের সহজ সমাধান দেখুন এখানেই।

২।অর্ধপরিবাহী ডায়োড কাকে বলে?

উত্তরঃ একটি p-type পরিবাহী এবং একটি n-type পরিবাহী পাশাপাশি সংযুক্ত করলে যে জাংশন তৈরী হয় তাকে p-n জাংশন ডায়োড বা অর্ধপরিবাহী ডায়োড বলে।

৩। p-n জাংশন কী?

উত্তরঃ একটি p-type পরিবাহী এবং একটি n-type পরিবাহী পাশাপাশি সংযুক্ত করলে যে জাংশন তৈরী হয় তাকে p-n জাংশন বলে।

১। ঝোঁক প্রদান বা বায়াস বলতে কী বুঝ?

উত্তরঃ একটি ডায়োডকে ডিসি উৎসের সাথে যুক্ত করে এর দুই প্রান্তে বহিঃস্থ ভোল্টেজ প্রয়োগ করার পদ্ধতিকে ঝোঁক প্রদান বা বায়াস বলে।

ঝোঁক দুই প্রকার। যথা-(ক) সম্মুখ ঝোঁক (খ) বিমুখী ঝোঁক

৪। ডায়োড কেন ঝোঁক প্রদান করা হয়?

উত্তরঃ ডায়োডে ঝোঁক প্রদান করার অর্থ হল এর দুই প্রান্তে একটি বহিঃস্থ ভোল্টেজ করা। যেহেতু ডায়োডের বিভব বাধ এই প্রযুক্ত বহিঃস্থ ভোল্টেজের উপর নির্ভর করে, ডায়োডে ঝোঁক প্রদান করে এর জাংশনের মধ্যে দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সম্মুখ ঝোকে ডায়োডের মধ্য দিয়ে তড়িৎপরিবহন ঘটে। বিমুখী ঝোকে সংখ্যাগরিষ্ঠ আধান বাহক দ্বারা তড়িৎপরিবহন না ঘটলেও সংখ্যালঘু আধান বাহক দ্বারা সামান্য তড়িৎপ্রবাহ সৃষ্টি হয়। ঝোঁক প্রদান করেই মূলত ডায়োডকে রেক্টিফায়ার হিসেবে কাজে লাগানো যায়।

৫। ডোপিং কী?

উত্তরঃ বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে যথোপযুক্ত কোনো অপদ্রব্য সুনিয়ন্ত্রিত উপায়ে মিশিয়ে এর পরিবাহীতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে ডোপিং বলে।

৭। PIV কী?

উত্তরঃ PIV এর পূর্ণ অর্থ হল Peak Inverse Voltage। PIV রেটিং বা PIV হল সর্বোচ্চ বিপরীতমুখী ভোল্টেজ যা ডায়োডে নিরাপদে প্রয়োগ করা যায়।

৮। ডোপিং কেন করা হয়?

উত্তরঃ সহজাত বা বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে মুক্ত ইলেকট্রন না থাকায় এদের পরিবাহীতা কম। বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে যথোপযুক্ত কোনো অপদ্রব্য সুনিয়ন্ত্রিত উপায়ে মিশিয়ে এর পরিবাহীতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে ডোপিং বলে। অর্থাৎ ডোপিং করে সহজাত বা বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীর পরিবাহীতা বৃদ্ধি করা যায়। ডোপিং এর মাধ্যমেই p-type অর্ধপরিবাহী ও n-type অর্ধপরিবাহী তৈরী করা হয়।

৬। ডায়োডের Q বিন্দু বা অপারেটিং বিন্দু বলতে কী বুঝ?

উত্তরঃ ডায়োডের Q বিন্দু বা অপারেটিং বিন্দু হল ডায়োডের I-V লেখের উপর এমন একটি বিন্দু যা ডায়োড ভোল্টেজ () এবং ডায়োড কারেন্ট () এর সুনির্দিষ্ট মান নির্দেশ করে। ডায়োডের ভার রেখা ও বৈশিষ্ট্য লেখের ছেদ বিন্দুই হল Q বিন্দু।

৯। ব্যান্ড তত্ত্বের আলোকে অর্ধপরিবাহীর সংজ্ঞা দাও।

উত্তরঃ যে সকল পদার্থের পরিবহন ব্যান্ড এবং যোজন ব্যান্ডের মধ্যবর্তী নিষিদ্ধ শক্তি ফাক (Band Gap Energy, Eg) এর মান প্রায় 1eV তাদেরকে অর্ধপরিবাহী বলে।

১০। পরিবাহী, অর্ধপরিবাহী ও অন্তরকের পরিবহন ও যোজ্যতা ব্যান্ডের মধ্যকার নিষিদ্ধ শক্তি ফাঁকের মান কত?

উত্তরঃ পরিবাহী পদার্থের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ শক্তি ফাক বা Eg=0

অর্ধপরিবাহী পদার্থের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ শক্তি ফাক বা Eg=1eV;

অন্তরক পদার্থের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ শক্তি ফাক বা Eg>5eV

১১। অন্তরকের মধ্য দিয়ে কেন কারেন্ট প্রবাহিত হয় না।

উত্তরঃ অন্তরক পদার্থের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ শক্তি ফাক বা Eg এর মান 5eV এর চেয়ে বেশি হওয়ায় যোজন ব্যান্ড হতে পরিবহন ব্যান্ডে ইলেকট্রন স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি অর্জন সম্ভব হয় না। একারণে পরিবহন ব্যান্ডে কোনো ইলেকট্রন থাকে না অর্থাৎ কোনো মুক্ত ইলেকট্রন না থাকায় অন্তরক পদার্থের মধ্যে দিয়ে কোনো কারেন্ট প্রবাহিত হয় না।

১২। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে অর্ধপরিবাহীর পরিবাহীতা বৃদ্ধি পায় কেন?

উত্তরঃ কক্ষ তাপমাত্রায় অর্ধপরিবাহীর পরিবহন ব্যান্ডের চেয়ে যোজন ব্যান্ডে ইলেকট্রন বেশি থাকে। পরিবহন ব্যান্ডে সামান্য ইলেকট্রন থাকায় এটির পরিবাহীতা খুব বেশি হয় না। অপরদিকে অর্ধপরিবাহী পদার্থের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ শক্তি ফাক বা Eg এর মান 1eV। ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে যোজন ব্যান্ড হতে ইলেকট্রন শক্তি অর্জন করে পরিবহন ব্যান্ডে গমন করে। অর্থাৎ তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে অর্ধপরিবাহীতে মুক্ত ইলেকট্রন বৃদ্ধি পায় বলে এর পরিবাহীতাও বৃদ্ধি পায়

১৩।  তাপমাত্রায় একটি অর্ধপরিবাহী কেন অন্তরকের ন্যায় আচরণ করে?

উত্তরঃ সহজাত অর্ধপরিবাহী বা বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহী যেমন সিলিকন বা জার্মেনিয়াম পরমাণুর যোজন স্তরে চারটি ইলেক্ট্রন বিদ্যমান। একটি সিলিকন ক্রিস্টালে কোনো একটি সিলিকন পরমাণু তার বহিঃস্থ শক্তিস্তরের চারটি ইলেকট্রনের সাহায্যে পার্শবর্তী চারটি সিলিকনের সাথে চারটি সমযোজী বন্ধন গঠন করে। সমযোজী বন্ধনগুলো খুবই শক্তিশালী। তাপমাত্রায় অর্ধপরিবাহী ক্রিস্টালের মধ্যে যে শক্তি বিদ্যমান তা এ বন্ধনগুলোকে ভাঙ্গার জন্য যথেষ্ট নয়। একারণে তাপমাত্রায় অর্ধপরিবাহীর পরিবহন ব্যান্ডে কোনো মুক্ত ইলেকট্রন থাকে না। একারণে  তাপমাত্রায় একটি অর্ধপরিবাহী কেন অন্তরকের ন্যায় আচরণ করে।

১৪। অর্ধপরিবাহীর মধ্য চার্জ বাহক কয়টি ও কী কী?

উত্তরঃ অর্ধপরিবাহীর মধ্য চার্জ বাহক দুটি যথা- (ক) ইলেকট্রন (খ) হোল

১৫। সহজাত ও বহির্জাত অর্ধপরিবাহী বলতে কী বুঝ?

উত্তরঃ সহজাত অর্ধপরিবাহীঃ যে সকল অর্ধপরিবাহীতে কোনো অপদ্রব্য বা ভেজাল মিশ্রিত থাকে না তাকে সহজাত অর্ধপরিবাহী বলে। যেমন বিশুদ্ধ সিলিকন বা জার্মেনিয়াম।

বহির্জাত অর্ধপরিবাহীঃ যে সকল অর্ধপরিবাহীতে কোনো অপদ্রব্য বা ভেজাল মিশ্রিত করে পরিবাহীতা বৃদ্ধি করা হয় তাকে বহির্জাত অর্ধপরিবাহী বলে। যেমন- p-type এবং n-type অর্ধপরিবাহী

১৬। p-type ও n-type অর্ধপরিবাহী কিভাবে পাওয়া যায়?

উত্তরঃ কোনো সহজাত অর্ধপরিবাহীতে সামান্য ত্রিযোজী মৌল অপদ্রব্য হিসেবে মিশানো হলে ঐ অর্ধপরিবাহীকে p-type অর্ধপরিবাহী বলে।

কোনো সহজাত অর্ধপরিবাহীতে সামান্য পঞ্চযোজী মৌল অপদ্রব্য হিসেবে মিশানো হলে ঐ অর্ধপরিবাহীকে p-type অর্ধপরিবাহী বলে।

১৭। p ও n অর্ধপরিবাহীর সংখ্যাগুরু এবং লঘু চার্জ বাহকের নাম লিখ।

উত্তরঃ p-type অর্ধপরিবাহীতে সংখ্যাগুরু আধান বাহক হিসেবে হোল এবং সংখ্যালুঘু আধান বাহক হিসেবে ইলেকট্রন অপরদিকে p-type অর্ধপরিবাহীতে সংখ্যাগুরু আধান বাহক হিসেবে ইলেকট্রন এবং সংখ্যালুঘু আধান বাহক হিসেবে হোল বিদ্যমান থাকে।

১৮। অর্ধপরিবাহীর পরিবাহীতা কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়?

উত্তরঃ বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে যথোপযুক্ত কোনো অপদ্রব্য সুনিয়ন্ত্রিত উপায়ে মিশিয়ে এর পরিবাহীতা বৃদ্ধি করা যায়। এই পদ্ধতিকে ডোপিং বলে। ডোপিং করে অর্ধপরিবাহীর পরিবাহীতে বৃদ্ধি করা যায়।

১৯। একটি p-n জাংশন ডায়োডের প্রতিক আঁক।

উত্তরঃ

২০। শুন্য স্তর (depletion region) কী?

উত্তরঃ একটি p-n জাংশন তৈরী হলে উভয় পার্শে মুক্ত চার্জ শূন্য একটি আয়ন সমৃদ্ধ অঞ্চলের সৃষ্টি হয়, মুক্ত চার্জ শুন্য এই অঞ্চলকে শুন্য স্তর বা ডিপ্লেশন স্তর বলে।

২১। বাধ বিভব/পটেনশিয়াল ব্যারিয়ার/ব্যারিয়ার ভোল্টেজ কী?

উত্তরঃ একটি p-n জাংশন তৈরী হলে উভয় পার্শে মুক্ত চার্জ শূন্য একটি আয়ন সমৃদ্ধ ডিপ্লেশন স্তরের সৃষ্টি হয়। ডিপ্লেশন স্তরে বিপরীতধর্মী আয়ন থাকার কারণে একটি বিভব পার্থক্যের সৃষ্টি হয়, এই বিভবপার্থক্যকে বাধ বিভব/পটেনশিয়াল ব্যারিয়ার/ব্যারিয়ার ভোল্টেজ বলে।

25oC তাপমাত্রায় বিভব বাধ Si (সিলিকন) ডায়োডের জন্য প্রায় 0.7V এবং Ge (জার্মেনিয়াম) ডায়োডের জন্য প্রায় 0.3V।

২২। বাধ বিভব কী কী বিষয়ের উপর নির্ভর করে?

উত্তরঃ বাধ বিভব ডোপিং ঘনত্ব, ইলেকট্রনিক চার্জ এবং তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে। একটি নির্দিষ্ট p-n জাংশনের জন্য প্রথম দুইটি ফ্যাক্টর স্থির থাকে। কাজেই কোনো নির্দিষ্ট p-n জাংশনের জন্য বাধ বিভব কেবল মাত্র এর তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে।

২৩। সম্মুখ বায়াস কী?

উত্তরঃ যখন একটি ডিসি উৎসের ধনাত্বক প্রান্ত p অঞ্চলের সাথে এবং ঋণাত্বক প্রান্তকে n অঞ্চলের সাথে সংযোগ দেওয়া হয় তখন তাকে এর সম্মুখ বায়াস বলে।

অথবা,

যখন p-n জাংশনে এমনভাবে বাহ্যিক ভোল্টেজ প্রয়োগ করা হয় যাতে জাংশনের বিভব প্রাচীরের উচ্চতা হ্রাস করে তড়িৎ প্রবাহ চালু করে তখন তাকে p-n জাংশনের সম্মুখ ঝোঁক বলে।

২৪। বিপরীতমুখী ঝোঁক/রিভার্স বায়াস কী? ডায়োড বর্তনী একে বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ যখন একটি ডিসি উৎসের ধনাত্বক প্রান্ত n অঞ্চলের সাথে এবং ঋণাত্বক প্রান্তকে p অঞ্চলের সাথে সংযোগ দেওয়া হয় তখন তাকে এর বিপরীতমুখী/রিভার্স বায়াস বলে। 

অথবা,

যখন p-n জাংশনে এমনভাবে বাহ্যিক ভোল্টেজ প্রয়োগ করা হয় যাতে জাংশনের বিভব প্রাচীরের উচ্চতা বৃদ্ধি করে তড়িৎ প্রবাহ বন্ধ করে তখন তাকে p-n জাংশনের বিপরীতমুখী ঝোঁক/রিভার্স বায়াস বলে।

২৫। বিপরীতমুখী বায়াসের সময় ডায়োডের মধ্য দিয়ে কেন কারেন্ট প্রবাহিত হয় না?

উত্তরঃ বিপরীতমুখী বায়াসের সময় উৎসের ঋণাত্বক প্রান্ত p অঞ্চলের হোলগুলোকে আকর্ষণ করার ফলে হোলগুলো জাংশন থকে দূরে সরে যেতে থাকে। আবার উৎসের ধনাত্বক প্রান্তের আকর্ষণে n অঞ্চলের ইলেকট্রনগুলো জাংশন থেকে দূরে সরে যেতে থাকে। এই কারণে p অঞ্চলে আরও ঋণাত্বক আয়ন এবং n অঞ্চলে ধনাত্বক আয়ন সৃষ্টি হয়। ফলে শুন্য স্তর/ডিপ্লেশন রিজিয়নের প্রস্থ এবং বাধ বিভবের মান বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই অবস্থায় সংখ্যা গুরু চার্জ (মেজরিটি ক্যারিয়র) অর্থাৎ n অঞ্চলের ইলেকট্রন অথবা p অঞ্চলের হোল কোনোটিই জাংশনকে অতিক্রম করতে পারে না। কাজেই বিপরীতমুখী বায়াসের সময় p-n জাংশনের মধ্য দিয়ে কোনো কারেন্ট প্রবাহিত হয় না।

২৬। নী (knee) বা থ্রেসোল্ড (threshold) ভোল্টেজ কী?

উত্তরঃ ডায়োডের সম্মুখ বৈশিষ্ট্য লেখ (ফরওয়ার্ড বায়াস I-V ক্যারাক্টারাস্টিক কার্ভ) থেকে দেখা যায় যে, সম্মুখ ভোল্টেজের মান একটি নির্দিষ্ট মানে না পৌছানো পর্যন্ত কারেন্টের মান শুন্য থাকে। বাধ বিভব (ব্যারিয়ার ভোল্টেজ) এর জন্য এরুপ ঘটে। সম্মুখ ভোল্টজের মান বৃদ্ধি করতে করতে একটি নির্দিষ্ট মানে পৌছানোর সাথে সাথে একটি ক্ষুদ্র মানের কারেন্ট বর্তনীতে চলতে থাকে। সম্মুখ ভোল্টেজের এ মানকে নী (knee) বা থ্রেসোল্ড (threshold) ভোল্টেজ বলে। একে অফসেট (offset) বা threshold বা firing বা turn on voltage ও বলা হয়। এর মান প্রায় বাধ বিভবের সমান।

২৭। বিপরীতমুখী সম্পৃক্ত কারেন্ট বা রিভার্স সেচুরেশন কারেন্ট কী?

উত্তরঃ ডায়োডের বিপরীতমুখী ঝোঁক/রিভার্স বায়াসের ক্ষেত্রে সংখ্যাগুরু চার্জ বাহক (মেজরিটি ক্যারিয়র) দ্বারা কোনো তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয় না। কিন্তু তাপশক্তির মাধ্যমে সৃষ্ট সংখ্যা লঘু চার্জ বাহক (মাইনরিটি ক্যারিয়র) গুলো বিপরীতমুখী ভোল্টেজের জন্য সম্মুখ বায়াস হিসেবে কাজ করে। এই  লঘু চার্জ বাহক (মাইনরিটি ক্যারিয়র) দ্বারা যে তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি হয় তাকে বিপরীতমুখী সম্পৃক্ত কারেন্ট বা রিভার্স সেচুরেশন কারেন্ট বলে।

২৮। অ্যাভালান্স ব্রেক ডাউন (Avalanche Breakdown) কী?

উত্তরঃ ডায়োডের বিপরীতমুখী বায়াসের ক্ষেত্রে এই ধরণের ব্রেকডাউন ঘটে থাকে। বিপরীতমুখী ভোল্টেজের মান বৃদ্ধি করতে থাকলে p অঞ্চলের সংখ্যা লঘু চার্জ বাহক ইলেকট্রন এর গতিশক্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে। উচ্চ গতি শক্তি সম্পন্ন এই ইলেকট্রন একটি সমযোজী বন্ধের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষের ফলে এক জোড়া ইলেকট্রন-হোল জোড় সৃষ্টি হয় অর্থাৎ আরোও দুটি মুক্ত ইলেকট্রন সৃষ্টি হয়। এই দুটি মুক্ত ইলেকট্রন অনুরুপ সংঘর্ষের ফলে আরো চারটি মুক্ত ইলেকট্রন সৃষ্টি করে। এভাবে প্রক্রিয়াটি চলতে থাকার ফলে শুন্য স্তরের মধ্যে হোল ও ইলেকট্রনের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এর ফলে জাংশনের মধ্যে দিয়ে উচ্চমাত্রার কারেন্ট (বিপরীত সম্পৃক্তি কারেন্ট) চলতে থাকে। এ ঘটনাকে অ্যাভাল্যান্স ব্রেক ডাউন বলে। বাহ্যিক রোধের মাধ্যমে কারেন্টকে নিয়ন্ত্রণ না করলে p-n জাংশন ডায়োডটি স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

২৯। জেনার ব্রেক ডাউন কী?

উত্তরঃ যে সকল p-n জাংশনে ডোপিং এর মাত্রা বেশি থাকে ফলে শুন্য স্তর/ডিপ্লেশন রেজিয়ন খুবই সরু হয় তাদের ক্ষেত্রে জেনার ব্রেক ডাউন ঘটে থাকে। আমরা জানি, । শুন্য স্তরের প্রস্থ, d এর মান কম হলে তড়িৎক্ষেত্রের মান, E বৃদ্ধি পায়। এই শক্তিশালী তড়িৎক্ষেত্রটি অর্ধপরিবাহী ক্রিস্টালে বিদ্যমান সমযোজী বন্ধনকে ভেঙ্গে ফেলে। সমযোজী বন্ধন ভাঙ্গার ফলে ইলেকট্রন হোল জোড়া সৃষ্টি হয়। এভাবে অধিক সংখ্যক চার্জ বাহক বৃদ্ধির ফলে হঠাৎ করে কারেন্টের মান প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। এ ঘটনাকে জেনার ব্রেকডাউন বলে। যে বিপরীতমুখী ভোল্টেজের জন্য জেনার ব্রেক ডাউন ঘটে তাকে জেনার ব্রেকডাউন ভোল্টেজ বলে। p-n জাংশনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে জেনার ব্রেক ডাউন ভোল্টেজের মান হ্রাস পায়।

৩০। ডায়োড কারেন্টের সমীকরণটি লিখ।

\dpi{100} \bg_white \large {\color{Blue} I = {I_o}\left( {{e^{eV/KT}} - 1} \right)}

৩১। আদর্শ ও প্রকৃত ডায়োডের ক্ষেত্রে তুল্য বর্তনী আঁক।

উত্তরঃ

৩২। 2nd Approoximation অনুসারে ডায়োডের তুল্য বর্তনী আঁক।

উত্তরঃ

৩৩। জার্মেনিয়াম ও সিলিকন ডায়োডের বাধ বিভবের মান কত?

25oC তাপমাত্রায় বিভব বাধ Si (সিলিকন) ডায়োডের জন্য প্রায় 0.7V এবং Ge (জার্মেনিয়াম) ডায়োডের জন্য প্রায় 0.3V।

৩৪। বাল্ক রোধ কী? বাল্ক রোধ নির্ণয়ের সমীকরণ লিখ।

উত্তরঃ বাল্ক রোধ p-n জাংশন ডায়োডের p ও n টাইপ অর্ধপরিবাহীর ওহমিক রোধকে নির্দেশ করে। এই রোধ p ও n টাইপ অর্ধপরিবাহীর ডোপিং মাত্রার ও আকৃতির উপর নির্ভর করে। অর্ধপরিবাহীর ডোপিং বেশি হলে বাল্ক রোধ কম হয়। বাল্ক রোধকে rB দিয়ে প্রকাশ করা হয়।

\dpi{100} \bg_white \large {\color{Blue} {r_B} = {r_p} + {r_n}}

যেখানে,

\dpi{100} \bg_white \large {\color{Blue} r_{p}=}p-টাইপ অর্ধপরিবাহীর ওহমিক রোধ;

\dpi{100} \bg_white \large {\color{Blue} r_{n}=}n-টাইপ অর্ধপরিবাহীর ওহমিক রোধ;

rB নির্ণয়ের সমীকরণটি নিম্নরূপঃ

\dpi{100} \bg_white \large {\color{Blue} {r_B} = \frac{{V - {V_B}}}{{{I_F}}}}

যেখানে, 

      \dpi{100} \bg_white \large {\color{Blue} V=}ডায়োডে প্রযুক্ত সম্মুখ বায়াস ভোল্টেজ;

      \dpi{100} \bg_white \large {\color{Blue} V_{B}=}বাধ বিভব/ব্যারিয়ার ভোল্টেজ;

      \dpi{100} \bg_white \large {\color{Blue} I_{F}=}  ডায়োডের সম্মুখ বায়াস কারেন্ট। 

৩৫। সম্পৃক্ত ও কাট-অফ অবস্থায় ডায়োডের কারেন্টের মান কেমন হয়?

উত্তরঃ

৩৬। ডায়োডের ডিসি/স্থৈতিক এবং এসি/ডাইনামিক/গতিয় রোধের সংজ্ঞা দাও।

উত্তরঃ ডিসি রোধ/স্থৈতিক রোধঃ ডায়োডে ডিসি ভোল্টেজ প্রয়োগ করলে যে রোধ পাওয়া যায় তাকে ডিসি রোধ বলে। ডায়োডের ডিসি রোধ হল যে কোনো মুহুর্তে মোট ভোল্টেজ ও এর মোট কারেন্টের অনুপাতের সমান।

অর্থাৎ,

\dpi{100} \bg_white \large {R_{dc}} = \frac{{{V_{_D}}}}{{{I_D}}}

যেখানে, 

\dpi{100} \bg_white \large {R_{dc}} =ডায়োডের ডিসি রোধ;

\dpi{100} \bg_white \large {V_{D}} =ডায়োডের ভোল্টেজ; 

\dpi{100} \bg_white \large {I_{D}} =ডায়োডের কারেন্ট।

এসি রোধঃ ডায়োডে এসি ভোল্টেজ প্রয়োগ করলে ডায়োড যে রোধ প্রদর্শন করে তাকে এসি রোধ বা ডাইনামিক রেজিস্ট্যান্স বা গতিয় রোধ বলে। ইহাকে rd  দিয়ে প্রকাশ করা হয়।

ডায়োডের বৈশিষ্ট্য লেখের উপর অবস্থিত Q বিন্দুর মধ্য দিয়ে অংকিৎ স্পর্শক রেখার ঢালের বিপরীত রাশিই হলো এসি বা গতিয় রোধের মান।

স্পর্শক রেখার ঢাল,

\dpi{100} \bg_white \large {\color{Blue} = \frac{{\Delta {I_D}}}{{\Delta {V_D}}}}

ডায়োডের গতিয় রোধ,

\dpi{100} \bg_white \large {\color{Blue} {r_D} = \frac{{\Delta {I_D}}}{{\Delta {V_D}}}}

ঢাল যত খাড়া হবে গতিয় রোধের মান তত কম হবে।

৩৭। ডায়োডের গতীয় রোধের সমীকরণ লিখ।

\dpi{100} \bg_white \large {\color{Blue} {r_D} = \frac{{\Delta {I_D}}}{{\Delta {V_D}}}}

৩৮। জার্মেনিয়াম ও সিলিকন ডায়োডের PIV কত?

উত্তরঃ জার্মেনিয়াম ডায়োডের PIV প্রায় 400V অপরদিকে সিলিকন ডায়োডের PIV প্রায় 1000V।

৩৯। ডিসি রোধ ও বাল্ক রোধের মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তরঃ ডিসি রোধ হল ডায়োডের বাল্ক রোধ ও ব্যারিয়ার ভোল্টেজ বা বাধ বিভবের প্রতিক্রিয়ার সমষ্টি। অর্থাৎ ডিসি রোধ হল ডায়োডের মোট রোধ। কিন্তু বাল্ক রোধ হল কেবলমাত্র p ও n অঞ্চলের ওহমিক রোধের যোগফলের সমান। কাজেই ডায়োডের ডিসি রোধ সর্বদা বাল্ক রোধের চেয়ে বেশি হয়।

৪০। যদি একটি সহজাত অর্ধপরিবাহীতে 10 লক্ষ মুক্ত ইলেকট্রন থাকে তবে এর হোলের সংখ্যা কত?

উত্তরঃ 10 লক্ষ হোল থাকবে।

৪১। জার্মেনিয়ামের চেয়ে সিলিকন ডায়োড অধিক জনপ্রিয় কেন?

উত্তরঃ জার্মেনিয়াম ডায়োডের চেয়ে সিলিকন ডায়োডের PIV (Peak Inverse Voltage) ও কারেন্ট রেটিং উচ্চমানের এবং তাপমাত্রার পাল্লাও বেশি। জার্মেনিয়াম ডায়োডের PIV প্রায় 400V অপরদিকে সিলিকন ডায়োডের PIV প্রায় 1000V। সিলিকন ডায়োডকে ব্যবহার করা যেতে পারে যেখানে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ 200oC এ পৌছায়। আবার জার্মেনিয়াম ডায়োডকে সর্বোচ্চ 100oC তাপমাত্রা পর্যন্ত ব্যবহার করা যেতে পারে। উচ্চমানের PIV রেটিং এবং তাপমাত্রার পাল্লা বেশি হওয়ায় জার্মেনিয়ামের চেয়ে সিলিকন ডায়োড অধিক জনপ্রিয়।

৪২। ডায়োডের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োগের নাম লিখ।

উত্তরঃ ইলেকট্রনিক বর্তনীতে ডায়োডকে নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে প্রয়োগ বা ব্যবহার করা হয়ঃ

১। রেকটিফায়ার বর্তনীত তৈরি করতে;

২। ডিমডুলেশন বর্তনীতে;

৩। ক্লাম্পার বর্তনী তৈরি করতে;

৪। কম্পিউটার লজিক বর্তনী তৈরি করতে;

৫। জেনার ডায়োডকে ভোল্টেজ রেগুলেটর হিসেবে;

৬। ডিসি যন্ত্রে বিপরীতমুখী ভোল্টেজকে প্রতিরোধ করতে।

৪৩। ডায়োডের বৈশিষ্ট্য লেখের উলম্ব অঞ্চলে এর গতিয় রোধের মান কম হয় কেন?

উত্তরঃ

৪৪। ৫টি অর্ধপরিবাহীর নাম লিখ।

উত্তরঃ বিশুদ্ধ জার্মেনিয়াম, সিলিকন, লেড সাইলফাইড, গ্যালিয়াম আর্সেনাইড, গ্যালিয়াম ফসফাইড, p-type এবং n-type অর্ধপরিবাহী।

৪৫। অর্ধপরিবাহী ও পরিবাহীর মধ্যকার প্রধান পার্থক্য কী কী?

উত্তরঃ (১) পরিবাহী পদার্থ অতিমাত্রায় তড়িৎপরিবাহী, অর্ধপরিবাহীর পরিবাহীতা পরিবাহী পদার্থের চেয়ে কম।

(২) পরিবাহী পদার্থের রোধ খুবই কম, অর্ধপরিবাহীর রোধ পরিবাহী পদার্থের চেয়ে বেশি কিন্তু অন্তরক পদার্থের চেয়ে কম।

(৩) পরিবাহী পদার্থের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ শক্তি ফাক Eg  প্রায় শুন্য অপরদিকে অর্ধপরিবাহী পদার্থের শক্তি ফাক Eg এর মান প্রায় 1eV।

(৪) তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে পরিবাহী পদার্থের রোধ বৃদ্ধি পায় কিন্তু অর্ধপরিবাহীর রোধ কমে যায়।

৪৬। পিক ইনভার্স ভোল্টেজের প্রয়োজনীয়তা কী?

উত্তরঃ PIV এর পূর্ণ অর্থ হল Peak Inverse Voltage। ডায়োডের PIV রেটিং দিয়ে বিপরীতমুখী বায়াসের সময় ডায়োড নিরাপদে সর্বোচ্চ কত ভোল্টেজ প্রয়োগ করা যাবে তা বোঝা যায়। PIV রেটিং সাধারণত ব্রেকডাউন ভোল্টেজের চেয়ে কম হতে হয়। একারণে PIV এর চেয়ে বেশি ভোল্টেজ প্রয়োগ করলে ডায়োড নষ্ট হয়ে যায়।

One response to “জানার আছে অনেক কিছু!!!”

  1. তানবীর says:

    সেরা

Leave a Reply

Your email address will not be published.