জানার আছে অনেক কিছু (নিউক্লিয়ার ফিজিক্স-১)!!!
নিউক্লিয়ার ফিজিক্স-১ কোর্সের বিভিন্ন অধ্যায়ের অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের সহজ সমাধান জেনে নিন এখান থেকেই।
নিউক্লিয়াসের মৌলিক ধর্মাবলী
১। নিউক্লিয়াস কী?
উত্তরঃ পরমাণুর কেন্দ্রস্থলে অতি ক্ষুদ্র স্থান যেখানে পরমাণুর প্রায় মোট ভর কেন্দ্রীভূত থাকে এবং যাহা শুধু নিউট্রন ও প্রোটন এর সমন্বয়ে গঠিত তাকে নিউক্লিয়াস বলে।
২। নিউক্লিয়াস উপাদান কী কী?
উত্তরঃ পরমাণুর নিউক্লিয়াস গঠনকারী উপাদান গুলি প্রোটন ও নিউট্রন যাদের সাধারণ নাম নিউক্লিয়ন।
৩। নিউক্লিয়ন কাকে বলে?
উত্তরঃ পরমাণুর নিউক্লিয়াস গঠনকারী প্রোটন ও নিউট্রন কণা দুটির সাধারণ নাম নিউক্লিয়ন।
৪। ভর সংখ্যা কী?
উত্তরঃ কোনো নিউক্লিয়াসে বিদ্যমান নিউট্রন এবং প্রোটনের মোট সংখ্যাকে নিউক্লিয়াসের ভর সংখ্যা বলে। একে A দিয়ে প্রকাশ করা হয়।
৫। পারমাণবিক সংখ্যা কী?
উত্তরঃ কোনো নিউক্লিয়াসে বিদ্যমান মোট প্রোটন সংখ্যাকে পারমাণবিক সংখ্যা বলে। একে Z দিয়ে প্রকাশ করা হ্য।
৬। নিউক্লিয়াসের ঘনত্ব কত?
উত্তরঃ নিউক্লিয়াসের ঘনত্ব প্রায় 1014 gm/cm3
৭। নিউক্লিয়াসের আকার নির্দেশক সমীকরণটি লিখ।
উত্তরঃ R=RoA1/3
৮। আইসোটোপ কী?
উত্তরঃ যে সব নিউক্লিয়াসের পারমাণবিক বা প্রোটন সংখ্যা একই কিন্তু ভর সংখ্যা ভিন্ন তাদেরকে আইসোটোপ বলে। 4
৯। আইসোবার কী?
উত্তরঃ যে সব নিউক্লিয়াসের ভর সংখ্যা একই কিন্তু পারমাণবিক বা প্রোটন সংখ্যা ভিন্ন তাদেরকে আইসোবার বলে।
১০। আইসোটোন কী?
উত্তরঃ যে সকল পরমাণুর নিউক্লিয়াসে সমান সংখ্যক নিউট্রন আছে তাদেরকে আইসোটোন বলে।
১১। আইসোমার কী?
উত্তরঃ যে সকল পরমাণুর নিউক্লিয়াসের ভর সংখ্যা এবং পারমাণবিক সংখ্যা একই কিন্তু তাদের অভ্যন্তরীণ গঠন এবং তেজস্ক্রিয় ধর্ম ভিন্ন তাদেরকে আইসোমার বলে।
১২। আইসো-ডায়া-ফেয়ার কী?
উত্তরঃ যে সকল পরমাণুর নিউক্লিয়াসে নিউট্রন ও প্রোটন সংখ্যার পার্থক্য একই তাদেরকে আইসো -ডায়া-ফেয়ার বলে।
১৩। মিরর নিউক্লিয়াস কী?
উত্তরঃ যে কোনো দুটি নিউক্লিয়াস যাদের একটি প্রোটন সংখ্যা ও নিউট্রন সংখ্যা অন্যটির যথাক্রমে নিউট্রন সংখ্যা ও প্রোটন সংখ্যার সমান হয় তবে তাদেরকে মিরর বা দর্পণ নিউক্লিয়াস বলে।
১৪। রেডিও আইসোটোপ কী?
উত্তরঃ এমন কতকগুলি আইসোটোপ আছে যারা অস্থায়ী এবং তেজস্ক্রিয়। এরা যে কোনো সময় বিশেষ ধরণের রশ্মি বিকিরণ করে অন্য পদার্থে পরিণত হয় তাদেরকে রেডিও আইসোটোপ বলে।
১৫। নিউক্লিয় ভর কী?
উত্তরঃ নিউক্লিয় ভর হচ্ছে প্রোটন ও নিউট্রনের ভরের সমষ্টির সমান।
১৬। নিউক্লিয় ঘনত্ব বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ নিউক্লিয়াসের ভর ও নিউক্লিয়াসের আয়তনের অনুপাতকে নিউক্লিয় ঘনত্ব বলে।
১৭। নিউক্লিয় চার্জ বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ নিউট্রন যেহেতু চার্জ নিরপেক্ষ সেকারণে নিউক্লিয় চার্জ বলতে নিউক্লিয়াসে বিদ্যমান প্রোটনের চার্জকেই বুঝায়।
১৮। নিউক্লিয় আকার বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ পদার্থের পরমাণুগুলো এত ক্ষুদ্র যে তাদেরকে শক্তিশালী অণুবীক্ষণ যন্ত্র দবারাও দেখা সম্ভব নহে। পরমাণুর তুলনায় নিউক্লিয়াসটি আবার অতি নগন্য আয়ত্ন জুড়ে থাকে। তবে বিভিন্ন নিউক্লিয়াসের আকৃতি ভিন্ন। নিউক্লিয়াসের আকৃতি নিউক্লিয়াসের ভর সংখ্যার উপর নির্ভর করে। নিউক্লিয়াসের আয়তন, ভরসংখ্যার সমানুপাতিক।
১৯। প্যাকিং ভগ্নাংশ বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ কোনো নিউক্লিয়াসের ভর এবং ভর সংখ্যার বিয়োগফলকে ভর সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে যে ভগ্নাংশ পাওয়া যায় তাকে প্যাকিং ভগ্নাংশ বলে। অথবা ভর ত্রটিকে তার ভর সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলেও প্যাকিং ভগ্নাংশ পাওয়া যায়।
২০। পারমাণবিক ভরসমূহ বা পারমাণবিক ভর একক কী?
উত্তরঃ একটি কার্বন-১২ পরমাণুর ভরের 1/12 অংশকে 1 পারমাণবিক ভর একক বলা হয় এবং ইহাকে সংক্ষেপে 1 amu ভাবে লেখা হয়।
২১। ভরত্রটি বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ কয়েকটি নিউট্রন ও প্রোটন একসঙ্গে যুক্ত হয়ে নিউক্লিয়াস গঠন করে। সেই হিসেবে নিউক্লিয়াসের ভর তার গঠনকারী উপাদান নিউট্রন ও প্রোটনের ভরের সমষ্টির সমান হওয়ার কথা। কিন্তু তা হয় না। নিউক্লিয়াসের ভর এবং তার উপাদানিক নিউক্লিয়নগুলোর ভরের যোগফলের এ পার্থক্যকে ভরত্রটি বলে।
২২। বন্ধন শক্তি বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ কোনো নিউক্লিয়াসকে ভেঙ্গে তার উপাদান (নিউট্রন ও প্রোটন) গুলিকে পরস্পরের প্রভাব হতে মুক্ত করতে নিউক্লিয়াসকে যে পরিমাণ শক্তি সরবরাহ করতে হয় তাকে নিউক্লিয় বন্ধন শক্তি বলে।
২৩। নিউক্লিয়ন পৃথকীকরণ শক্তি বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ কোনো নিউক্লিয়াস হতে একটি নিউক্লিয়ন (নিউট্রন অথবা প্রোটন) বের করে আনতে নূন্যতম যে পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন হয় তাকে নিউক্লিয়ন পৃথকীকরণ শক্তি বলে। প্রোটন বের করার আনার প্রয়োজনীয় শক্তিকে প্রোটন পৃথকীকরণ শক্তি এবং নিউট্রন বের করার আনার প্রয়োজনীয় শক্তিকে নিউট্রন পৃথকীকরণ শক্তি বলে।
২৪। নিউক্লিয় বল কী?
উত্তরঃ নিউক্লিয়াসের ভিতর নিউট্রন ও প্রোটন এক প্রকার বলের সাহায্যে সংঘবদ্ধ থাকে। এ বলকে নিউক্লিয় বল বলে।
২৫। হালকা নিউক্লিয় নিউক্লিয়াসের জন্য বন্ধন শক্তি কম হয় কেন?
উত্তরঃ ভর সংখ্যার স্বল্পতার তাদের নিউক্লিয়ন গুলির বন্ধন শক্তি পুরোপুরি ভাবে কাজে লাগাতে পারে না। তাছাড়া তাদের ভর ঘাটতি খুবই কম। এজন্য হালকা নিউক্লিয়াসের জন্য বন্ধন শক্তি কম হয়।
২৬। একটি ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে না কেন?
উত্তরঃ একটি মুক্ত ইলেক্ট্রনকে নিউক্লিয়াস্র মধ্যে থাকার জন্য কমপক্ষে 10MeV গতিশক্তি প্রয়োজন। কিন্তু ইলেকট্রনের স্থির ভর শক্তি মাত্র 0.5MeV এবং পরীক্ষণীয় ভাবে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ মান 4MeV যা আমাদের হিসাবকৃত মানের চেয়ে অনেক কম। এই কারণে একটি ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে না।
২৭। নিউক্লিয়ন প্রতি বন্ধন শক্তি কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো নিউক্লিয়াসের মোট বন্ধন শক্তিকে তার মোট নিউক্লিয়ন সংখ্যা বা ভর সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে প্রতি নিউক্লিয়াস বন্ধন শক্তি পাওয়া যায়।
২৮। নিউক্লিয় বলের সম্পৃক্তি কাকে বলে?
উত্তরঃ যে ধর্ম দ্বারা নিউক্লিয়ন গুলি শুধুমাত্র তার সাথে লেগে থাকা নিউক্লিয়নকে আকর্ষণ করে, দূরবর্তী নিউক্লিয়নকে আঁকর্ষণ করে না তাকে নিউক্লিয় বলের সম্পৃক্তি বলে।
Leave a Reply