Physics Plus ICT

জানার আছে অনেক কিছু (বস্তুর গাঠনিক ধর্মঃ স্থিতিস্থাপকতা)


বস্তুর গাঠনিক ধর্মঃ স্থিতিস্থাপকতা সম্পর্কিত জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নের সহজ উত্তর দেখুন এখানেই।

১। স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে?

উত্তরঃ বস্তুর যে ধর্মের কারণে বল প্রয়োগে বিকৃতি ঘটে এবং বল অপসারণ কলে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে তাকে স্থিতিস্থাপকতা বলে।

২। পূর্ণ নমনীয় বস্তু কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে বিকৃত করলে যদি বল অপসারণের পর বস্তুটি ঐ বিকৃত অবস্থা পুরোপুরি বজায় রাখে তাহলে বস্তুটিকে পূর্ণ নমনীয় বস্তু বলে। কোনো বস্তুই সম্পূর্ণ নমনীয় নয়। যেমন – আটার দলা, মাটির দলা, প্লাস্টিক ইত্যাদিকে নমনীয় বস্তু ধরা হয়।

৩। পূর্ণ স্থিতিস্থাপক বস্তু কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে বিকৃত করলে যদি বল অপসারণের পর বস্তুটি পূর্ণভাবে পূর্বাবস্থা ফিরে পায় তবে ঐ বস্তুটিকে পূর্ণ স্থিতিস্থাপক বস্তু বলে।

৪। পূর্ণ দৃঢ় বস্তু কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো বস্তুর উপর যে কোনো পরিমাণ বল প্রয়োগে যদি তার বিকৃতি বা আকারের কোনো পরিবর্তন না হয় তবে ঐ বস্তুওকে পূর্ণ দৃঢ় বস্তু বলে।

৫। আংশিক স্থিতিস্থাপক বস্তু কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে বিকৃত করলে যদি বল অপসারণের পর বস্তুটি আংশিকভাবে পূর্বাবস্থা ফিরে পায় তবে ঐ বস্তুটিকে আংশিক স্থিতিস্থাপক বস্তু বলে।

৬। স্থিতিস্থাপক সীমা কাকে বলে?

উত্তরঃ যে মানের বল কোনো বস্তু পূর্ণ স্থিতিস্থাপক থাকে অর্থাৎ সর্বাপেক্ষা বেশি যে বল প্রয়োগ করলে বা অপসারণ কলে বস্তুটি পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায়, তাকে বস্তুর স্থিতিস্থাপক সীমা বলে।

৭। বিকৃতির সংজ্ঞা দাও।

উত্তরঃ বাহ্যিক বল প্রয়োগের ফলে কোনো বস্তুর একক মাত্রার যে পরিবর্তন ঘটে তাকে বিকৃতি বলে।

বিকৃতির কোনো একক নেই। কারণ একই জাতীয় দুটির রাশির অনুপাত।

৮। পীড়নের সংজ্ঞা দাও।

উত্তরঃ বাহ্যিক বল প্রয়োগে কোনো বস্তুর দৈর্ঘ্য বা আকার বা আয়তনের পরিবর্তন ঘটালে স্থিতিস্থাপকতার জন্য বস্তুর ভিতর থেকে এক ধরণের বাধাদানকারি প্রতিক্রিয়া বলের উদ্ভব হয়। বস্তুর একক ক্ষেত্রফলের উপর লম্বভাবে প্রযুক্ত ক্রিয়ামূলক বা প্রতিক্রিয়ামূলক বলের মানকে পীড়ন বলে।

৯। অসহ ভার, অসহ পীড়ন এবং স্থিতিস্থাপক ক্লান্তি কাকে বলে?

উত্তরঃ অসহ ভারঃ সর্বাপেক্ষা কম যে ভার বা ওজনের ক্রিয়ায় কোনো বস্তু ছিড়ে বা ভেঙ্গে যায় তাকে ঐ বস্তুর অসহ ভার বা অসহ বল বা অসহ ওজন বলে।

অসহ পীড়নঃ কোনো পদার্থের একক ক্ষেত্রফলের উপর লম্বভাবে প্রযুক্ত সর্বাপেক্ষা কম যে বলের ক্রিয়ায় বস্তুটি ছিড়ে বা ভেঙ্গে যায় তাকে অসহ পীড়ন বলে।

স্থিতিস্থাপক ক্লান্তিঃ স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে কোনো বস্তুওকে ক্রমাগত বা বারবার পীড়নের হ্রাস-বৃদ্ধি করলে পীড়নের সাথে সাথে বস্তুটির বিকৃতি ঘটে না, বিকৃতি ধীর গতিতে সংঘটিত হয় এবং বস্তুর স্থিতিস্থাপক ধর্মের অবনতি ঘটে। বস্তুর এ ধর্মকে স্থিতিস্থাপক ক্লান্তি বলে।

১০। হুকের সূত্রের বিবৃতি দাও।

উত্তরঃ বিবৃতিঃ স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে বস্তুর পীড়ন এর বিকৃতির সমানুপাতিক।

১১। বিভিন্ন ধরণের স্থিতিস্থাপক গুণাংকের নাম লিখ এবং তাদের সংজ্ঞা দাও।

উত্তরঃ স্থিতিস্থাপক গুণাংক তিন ধরণের যথা-

(ক) ইয়ং এর স্থিতিস্থাপক গুণাংক;

(খ) দৃঢ়তার স্থিতিস্থাপক গুণাংক;

(গ) আয়তনের স্থিতিস্থাপক গুণাংক।

(ক) ইয়ং এর স্থিতিস্থাপক গুণাংকঃ স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে বস্তুর দৈর্ঘ্য পীড়ন ও দৈর্ঘ্য বিকৃতির অনুপাত একটি ধ্রব সংখ্যা। এই ধ্রব সংখ্যাকে বস্তুর উপাদানের ইয়ং এর গুণাংক বলে।

(খ) দৃঢ়তার স্থিতিস্থাপক গুণাংকঃ স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে বস্তুর আকার বা ব্যবর্তন পীড়ন ও আকার বা ব্যবর্তন দৈর্ঘ্য বিকৃতির অনুপাত একটি ধ্রব সংখ্যা। এই ধ্রব সংখ্যাকে বস্তুর উপাদানের দৃঢ়তার গুণাংক বলে।

(গ) আয়তনের স্থিতিস্থাপক গুণাংকঃ স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে বস্তুর আয়তন পীড়ন ও আয়তন বিকৃতির অনুপাত একটি ধ্রব সংখ্যা। এই ধ্রব সংখ্যাকে বস্তুর উপাদানের আয়তনের স্থিতিস্থাপক গুণাংক বলে।

১২। ইস্পাত রাবার অপেক্ষা বেশি স্থিতিস্থাপক কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ বাহ্যিক বলের বিররুদ্ধে যে বস্তুর বাধাদানের ক্ষমতা যত বেশি পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় তার স্থিতিস্থাপকতাও তত বেশি। অন্য ভাষায় বলা যায় ইয়ং এর যে পদার্থের যত বেশি তার স্থিতিস্থাপকতাও তত বেশি। সমান দৈর্ঘ্য এবং সমান প্রস্থক্ষেত্রফল বিশিষ্ট ইস্পাত ও রাবারের তারের মধ্যে একই পরিমাণ বিকৃতি ঘটাতে রাবার অপেক্ষে ইস্পাতে বেশি বল প্রয়োগ করতে হয়। তাই, রাবার অপক্ষে ইস্পাত বেশি স্থিতিস্থাপক।

১৩। পয়সনের অনুপাতের সংজ্ঞা দাও।

উত্তরঃ স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে বস্তুর পার্শ বিকৃতি ও দৈর্ঘ্য বিকৃতির অনুপাত একটি ধ্রব সংখ্যা। এই ধ্রব সংখ্যাকে বস্তুর উপাদানের পয়সনের অনুপাত বলে।

১৪। পয়সনের অনুপাতের সীমার মান কত?

\large {\color{Blue} 0\leq \sigma \leq \frac{1}{2}}

১৫। স্প্রিং সাধারণত ইস্পাতের তৈরি হয়, তামার হয় না কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ ইস্পাতের স্থিতিস্থাপকতা তামার তুলনায় বেশি। একারণে তামার তুলনায় ইস্পাতের স্থিতিস্থাপকতা সীমার মানও বেশি। মনে করি, একই আকারের একটি ইস্পাতের তৈরি ও অপরটি তামার তৈরি দুটি স্প্রিং এর উপর সমান বল প্রয়োগ করা হল। আস্তে আস্তে প্রযুক্ত বলের মান বাড়ানো হলে দেখা যাবে, যে বলের ক্রিয়ায় ইস্পাতের তৈরি স্প্রিঙ্গে স্থিতিস্থাপকতা ধর্ম বজায় থাকছে সে বলের ক্রিয়ায় তামার তৈরি স্প্রিং-এ স্থায়ী বকৃতি ঘটছে। তাই স্প্রিং সাধারণত তামার পরিবর্তে ইস্পাত দিয়ে তৈরি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.